ভাইরাল না হলে চাকরির যোগ্যতার প্রমাণ মেলে না

আলমগীর কবির, ইমরান, পারিসা আক্তার ও সন্তোষ রবি দাস
আলমগীর কবির, ইমরান, পারিসা আক্তার ও সন্তোষ রবি দাস  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে ‘ভাইরাল’ একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। বৃদ্ধ থেকে স্কুল শিক্ষার্থী সবার কাছেই পরিচিত ‘ভাইরাল’। কোনো কন্টেন্ট বা ঘটনা, ভিডিও বা লেখা অনলাইনে হড়কা বানের মতো প্রচণ্ড গতিতে সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়লে সেটিকে বলা হয় ভাইরাল। কেউ স্বেচ্ছায় কেউবা ভাইরাল হচ্ছেন অনিচ্ছায়। এখন বর্তমান সমাজ এই ভাইরালের সুফল ও কুফল দুই ভোগ করছে।

তবে বিগত কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে যুব সমাজের চাকরি পেতে বেশ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে এই ‘ভাইরাল’ শব্দটি। যেই ছেলেটি হয়তো একাধিক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েও একটি চাকরি যোগাড় করতে পারছিলেন না তিনিও ঘটনাক্রমে ভাইরাল হলে তাকেই খুঁজে নিচ্ছেন কোম্পানির চাকরিদাতারা। এভাবে একাধিক জনের কর্মসংস্থান হলেও বিষয়টি উদ্বেগজনক কিনা সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে অনেকের মনে।

সম্প্রতি চা শ্রমিক মায়ের ছেলে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সন্তোষ রবি দাসের অভাব নিয়ে লেখা পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর ইউএনও পক্ষ থেকে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন। স্নাতকোত্তর পাস করা মৌলভীবাজারের সন্তোষ এতদিন চাকরি খুঁজে না পেলেও, ভাইরাল হওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক থেকেও চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

গত জুলাইয়ে ছিনতাইকারী ধরে আলোচনায় আসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারিসা আক্তার। ব্যতিক্রম এ সাহসী ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার পর পারিসাকে সাহসিকতার জন্য সম্মাননা জানিয়ে চাকরি দেয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। 

এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বগুড়ার আলমগীর কবির নামে এক তরুণ 'শুধুমাত্র দু'বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই' লিখে বিজ্ঞাপন দিয়ে নেট দুনিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হন। বগুড়ার আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেও যখন চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তখন তার যোগ্যতার সাক্ষী দিয়েছে ‘ভাইরাল’। ওই ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান চাকরি পান তিনি।

এছাড়াও গত বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মুখে দাড়ি থাকায় চাকরি না দেওয়ার অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঢাকার তেজগাঁও আড়ং শোরুমে চাকরির প্রস্তাব পান ইমরান হোসাইন লিমন।

আরও পড়ুন: ইউএনওর চাকরির অফার ফিরিয়ে দিলেন সন্তোষ

এ বিষয়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সোহেল হাসান বলেন, ‘এত বছর ভালো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা শেষ করেও ভাইরাল হওয়াই যদি চাকরি পাওয়ার মানদণ্ড হয়ে তবে বিষয়টি দুঃখজনক। তবু এভাবেও যদি কিছু তরুণ-তরুণীর বেকারত্ব ঘোচে সেটাও আর্শীবাদ।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘ইদানিং ভাইরাল না হলে চাকরি পাওয়া যায় না। কিন্তু কি আর করব? ভাইরাল কিভাবে হতে হয় সেটাও তো জানি না। তাই চাকরিও হয় না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, ভাইরাল হয়ে যাদের চাকরি হচ্ছে তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। কিন্তু ভাইরাল না হয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় একজন যুবক কেন চাকরি খুঁজে পান না? কিছু ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আমাদের যুব সমাজকে ভুল বার্তা দেয়। এই জন্যেই শিক্ষার্থীরা এখন ফেসবুক, ইউটিউব, ইস্ট্রাগ্রাম এসবের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়ছে। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence