ইলিশজাত পণ্য নিয়ে বাকৃবির গবেষক দলের সাফল্য

বাকৃকির গবেষক দল
বাকৃকির গবেষক দল  © টিডিসি ফটো

ইলিশ বিশ্বব্যাপী পরিচিত একটি সুস্বাদু ও মূল্যবান মাছ। বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের প্রায় ৭৫ ভাগই হয় বাংলাদেশে। দেশের চাহিদে মিটিয়ে বিশ্বেও বিভিন্ন দেশে এর চাহিদা থাকায় রপ্তানীতেও রয়েছে অনেক সুযোগ। কিন্তু ইলিশ মাছের অতিরিক্ত কাটা এবং মাংসের চর্বি পচনশীল হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি সম্ভব হয় না।

আরও পড়ুন: মেডিকেলের মাইগ্রেশনের তালিকা প্রকাশ হতে পারে সোমবার

তাই ইলিশের মূল্য সংযোজন পণ্য এবং তা প্রায় এক বছর স্বাধ ও গন্ধে অপরিবর্তিত রাখার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষক অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তার গবেষক দল। গবেষক দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন আল শাহরিয়ার ও ড. মো. সাজেদুল হক। এ গবেষণা সম্পর্কিত একটি রিসার্চ পেপার হেলিয়ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য দেন ড. এ কে এম নওশাদ আলম। 

আরও পড়ুন: ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ, বাড়ল আবেদনের সময়

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, অতিরিক্ত চর্বির জন্য লবণাক্তকরণ (নোনাইলিশ) ছাড়া দীর্ঘদিন এ মাছ সংরক্ষণ করা যায় না। ইলিশের চর্বির সংরক্ষণ সক্ষমতা খুবই কম কারণ এটি বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ইলিশের স্বাধ গন্ধকে নষ্ট কওে ফেলে। তাই ইলিশ-পণ্য তৈরি করে কক্ষ তাপমাত্রায় (২৫-৩০ সেলসিয়াস) কিংবা ফ্রিজে -২০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ সম্ভব হয় না। অন্যদিকে ইলিশে বিদ্যমান অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডকে অক্সিজেনে জারিত হওয়া না থামালে তা পঁচে দূর্গন্ধময় হয়ে যায়।

“জারণ বন্ধ করার জন্য দরকার ছিল একটি কার্যকরী ও উপকারি ভেষজ এন্টি অক্সিডেন্ট। ইলিশের চর্বিকে স্থিতিশীল করার জন্য এই নতুন উদ্ভাবিত ভেষজ এন্টি-অক্সিডেন্টটি হচ্ছে গাজর থেকে আহরিত ক্যারোটিনয়েড বা বিটা-ক্যারোটিন। যাকে ব্যবহারের মাধ্যমে ইলিশ মাছের স্বাদ ও গন্ধকে অপরিবর্তিত রেখে এই পথম ইলিশ-পাউডার ও ইলিশ কিউব তৈরি করা হয়েছে। ইলিশের স্বাদ অপরিবর্তিত রেখে কিউবগুলোকে রেফ্রিজারেটরে ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।”

আরও পড়ুন: নোবিপ্রবিতে ভর্তির আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে কাল

উদ্ভাবিত পণ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন পণ্যে আমিষ, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড,ওমেগা-৩ ফ্যাটি আ্যসিড, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও অন্যান্য খনিজসহ ইলিশ মাছের সকল পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন অক্ষুন্ন রয়েছে। তিনি আরও জানান, এক হাজার টাকা দামের একটি এক কেজি ইলিশ মাছ থেকে ছোট আকৃতির প্রায় ২০০ কিউব তৈরি করা সম্ভব। প্রতিটি কিউবের বাজারমূল্য ২০ টাকা। একটি কিউব দিয়ে ইলিশের হুবহু স্বাদের এক বাটি স্যুপ তৈরি করা সম্ভব।


সর্বশেষ সংবাদ