বুয়েটে চান্স পেতে হলে যেভাবে প্রস্তুতি নেবেন

শাহরিম আল ফারাবি
শাহরিম আল ফারাবি  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) দেশসেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থীর পছন্দের শীর্ষ থাকে বুয়েট। এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চান্স পেতে শিক্ষার্থীদের করতে হয় কঠিন অধ্যাবসায় আর পরিশ্রম। কীভাবে বুয়েটে চান্স পেতে হয় সে বিষয়ে লিখেছেন বুয়েটে মেধাতালিকায় শীর্ষে থাকা শাহরিম আল ফারাবি

বুয়েটে চান্স পেতে যেভাবে পড়বেন
অ্যাডমিশন ফেইজের শুরু থেকেই আমি ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ এই তিন বিষয়ে সমান গুরুত্বারোপ করি। প্রতিটি অধ্যায় ১বার করে রিভিশন দেওয়ার পর ওই অধ্যায় সংশ্লিষ্ট মূল বইয়ের অনুশীলনী ও সহায়ক বইয়ের প্রবলেমসমূহ সলভ করে অনুশীলন করতাম। অ্যাডমিশন টেস্টে ভালো করতে মেধা নয়, পরিশ্রমটাই বেশি জরুরি। যত বেশি প্র্যাকটিস করা হবে, তত বেশি নির্ভুলতা বাড়বে। সহজ ম্যাথও স্কিপ না করে আয়ত্তে রাখতাম।

আমার পড়াশোনার সময়সূচি ছিল— সকাল ৯টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত। মাঝে নিত্যকর্মের বিরতি ছিল অবশ্য। তন্দ্রা কাটাতে নিয়মিত কফি খেতাম। পরীক্ষার আগে মানসিক চাপমুক্ত থাকাটা খুব জরুরি। এজন্য এক্সামের আগের দু’দিন কিছুটা কম পড়েছিলাম।

ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত কোনো টপিক স্কিপ না করে বোর্ড এক্সামের জোরালো প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। এইচএসসি পরীক্ষার আগে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ডেডিকেটেড কোনো প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজন নেই। ভর্তি পরীক্ষায় অর্ধেকাংশই আসবে বোর্ড স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্ন। বাকি অর্ধেক প্রস্তুতি নিতে হবে এইচএসসি পরীক্ষার পর।

একেক শিক্ষার্থীর দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে গোল্ডেন আওয়ার থাকে, যে সময়ের মধ্যে ব্রেন খুব ভালোমতো ইনপুট নিতে পারে। শিক্ষার্থীকে নিজে অ্যানালাইসিস করে গোল্ডেন আওয়ার নির্ধারণ করে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যাকাডেমিক ফেইজের চেয়ে অ্যাডমিশন ফেইজে অবশ্যই পড়ার সময় বাড়াতে হবে। কেননা, অ্যাডমিশন টেস্টে সারাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সেরাদের বাছাই করা হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, যেটা আমরা প্রায়শই ভুলে যাই, একটা কঠিন ম্যাথ না পারলে র‍্যাংকের অনেক তফাত হবে না, কিন্তু সহজ কোনো ম্যাথ ভুল করলে চান্স পাওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তাই বেশি বেশি অনুশীলন জরুরি।

একটানা পড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই একঘেয়েমি বা বিরক্তি আসবে। একঘেয়েমি দূর করতে শখের কাজ করা যেতে পারে। কিন্তু তা অবশ্যই ইলেকট্রনিক ডিভাইস-অসংশ্লিষ্ট হতে হবে। আর এ বিরতির সময় যেন অনধিক হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

অনেকে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে এক সপ্তাহ পর পুনরায় অ্যাক্টিভেট করে ফেলে। আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট কিংবা অ্যাপ আনইনস্টল করার পরিবর্তে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি। ইন্টারনেটের সুব্যবহার করতে হবে। গুগলের সাহায্যে অনেক কনফিউশন দূর করা যায়।

বিষয়ভিত্তিক প্রিপারেশন যেভাবে নেবেন
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় মূলত ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ ও ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও ম্যাথের জন্য প্রথমে মূল বইয়ের কনসেপ্ট ভালোমতো বুঝতে হবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কন্সেপ্টচুয়াল প্রশ্ন সল্‌ভ করা যায়, তেমনই ম্যাথেমেটিকাল প্রবলেম সল্‌ভ করতেও সুবিধাজনক হয়।

গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান
ফিজিক্স ও ম্যাথের জন্য বিভিন্ন প্রবলেম সল্‌ভ করার অনুশীলন করতে হবে অত্যধিক। কেমিস্ট্রিতে থিওরি পার্ট অনেক বেশি হওয়ায় গাণিতিক প্রবলেমের পাশাপাশি মূল বইও নিয়মিত আত্মস্থ করতে হবে। অ্যাডমিশন টেস্টে কেমিস্ট্রি পার্ট দিয়ে শুরু করা একটি ভালো স্ট্র্যাটেজি। এই অংশে ভাবার বিষয় কম থাকে, দ্রুত শেষ করা যায়।

ইংরেজির জন্য যেহেতু কোনো নির্ধারিত সিলেবাস নেই, তাই এক্সামের কিছুদিন আগে থেকে কেবল প্রশ্নব্যাংক প্র্যাকটিস করা ভালো। এক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক লাইফের ইংলিশ স্কিলই যথেষ্ট বলে আমি মনে করি।

সম্পূর্ণরূপে কোচিং-নির্ভর হওয়া উচিত নয়
কোচিং সেন্টারের মডেল টেস্ট ও সহায়ক বইগুলো অনুশীলনের জন্য বেশ কার্যকরী। মডেল টেস্টগুলো এক্সাম হল স্ট্রেস কমাতেও সহায়ক। টপিক দেখে ক্লাস করতে হবে; সহজ টপিকে ক্লাস করে সময় নষ্ট করা উচিত নয়।

তবে সম্পূর্ণরূপে কোচিং-নির্ভর হওয়া যাবে না। মূল বইয়ের কনসেপ্ট না পড়ে শুধু কোচিং সেন্টারের বই বা নোট পড়লে হবে না। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার দীর্ঘ সময় একটানা ক্লাস নিয়ে হায়ার লেভেলের অপ্রয়োজনীয় কনসেপ্ট শেখায়। এগুলো স্কিপ করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence