গুচ্ছ ভর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন পদ্ধতি চালুর পরামর্শ

ভর্তি পরীক্ষার্থী
ভর্তি পরীক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের সুযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এই পরামর্শ দেয়া হয়।

ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম- এর সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৩৬ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপাচার্যগণের মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ১৪৪ বিষয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট দিত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, উপাচার্য গ্রেফতার

সভা সূত্রে জানা গেছে, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী সংকট দূর করতে মেডিকেল ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্রছাত্রী ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আসন খালি থাকা সাপেক্ষে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশন করতে পারবেন। মাইগ্রেশনের কারণে বিষয় পরিবর্তন হলেও শিক্ষার্থীদের যেন বাড়তি ফি দিতে না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজকের সভায় উপাচার্যরা প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার। এক্ষেত্রে বিভাগগুলো ভর্তি করাতে পারবে না। কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি করাবে। এটি করা হলে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে না।

আরও পড়ুন: অনুরোধ, মেডিকেলে প্রথম হয়ে পরে আবার বিসিএস দেবেন না

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে মাইগ্রেশন চালু করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, মেডিকেল ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তির পর মাইগ্রেশন করে ভালো কলেজ ও বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পায়।সেই পদ্ধতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যেও আনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।  

গুচ্ছে সেকেন্ড টাইম রাখার সিদ্ধান্ত

এদিকে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুদের কিছু শর্ত আরোপ করা হতে পারে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক জানান, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সব উপাচার্য এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সাথে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগপ্রাপ্তদের শর্তের বিষয়ে তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের পরবর্তী সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। আজকের সভায় সেকেন্ড টাইম রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিন গুচ্ছে ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে ভর্তি পরীক্ষা

দেশের ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর নতুন করে আরো তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়েছে। গত বছর তিনটি গুচ্ছে ২৯ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে। গুচ্ছ তিনটি হচ্ছে- সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং কৃষি ও কৃষি প্রধান।

এবছর গুচ্ছভুক্ত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে-- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ; চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় জানানো হবে। তবে, এবছর প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন হতে পারে।

সভায় গুচ্ছের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে দ্রুত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি, ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল ও ভর্তির সময় প্রকাশ করা, কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট এর প্লেসমেন্ট, মাইগ্রেশনের সময় নির্ধারণ, ভর্তি ফি একবার প্রদানের সুপারিশ করে ইউজিসি। এছাড়া, ইউজিসি’র পক্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা ও শিক্ষার্থী ভর্তি কম হয় এমন বিভাগগুলোর আসন সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ