জাবি ভিসি প্যানেল নির্বাচন: রিটের নেপথ্যে কোষাধ্যক্ষের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি প্যানেল নির্বাচন আগামী ১২ আগস্ট। দীর্ঘ আট বছর বছর পর এই নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক আবহ বিরাজ করছে। অন্যদিকে নির্বাচন বানচাল করার অভিযোগ উঠেছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

গত ২রা আগস্ট জাবি ভিসির পদবী ও প্যানেল নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে উল্লেখ আছে, জাবির রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট মো. শামসুজ্জোহার পক্ষে এই রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলা উদ্দিন আহমেদ। তিনি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বার্থে ও রিট করেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

তবে আলা উদ্দিন আহমেদ অ্যাডভোকেট শামসুজ্জোহাকে রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট হিসেবে দাবি করলেও দুজনের কেউই কোন সেশন ও কত ব্যাচের ছাত্র তা স্পষ্ট করে নি। অ্যাডভোকেট শামসুজ্জোহাকে এ সংক্রান্ত পরিচয়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে পরে বলবেন বলে জানান তিনি। 

এদিকে রিটের নেপথ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের সহযোগিতার প্রমাণ মিলেছে। রিট পরিশিষ্ট নথি ‘ডি’তে একটি গোপনীয় চিঠি সংযুক্ত করা হয়েছে। এই চিঠিটি জাবি রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে প্রেরণ করেন। এটি একটি গোপনীয় চিঠি বলেও উল্লেখ আছে সেখানে। রিটে অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে পাঠানো চিঠির কথা বলা হয়েছে। 

আরো দেখা গেছে, সাধারণত এ সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে আগে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু এখানে তার উল্টোটা হয়েছে। ‘লুকোচুরি’ করে আদালত থেকে আদেশ নিয়ে আসতে গেলেও আদালত লিগ্যাল নোটিশ দিতে বলে আগে। তাই ২ আগস্ট রিট দায়ের করলেও ৪ আগস্ট পুনরায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

রিটে উপাচার্যের বৈধতা চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সিনেট অধিবেশন ও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিত চাওয়া হয়েছে। এতে সিনেটরদের মেয়াদোত্তীর্ন হওয়া, ‘রেজিস্ট্রার কর্তৃক’ সিনেট অধিবেশন আহ্বান ও শোকের মাসে সিনেট অধিবেশন আহ্বানকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একই যুক্তি অধ্যাপক রাশেদা আখতারের অনুসারীরা গণমাধ্যমগুলোতেও দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ভর্তিযুদ্ধ বৈষম্য: এক শিফটে ৭৪৭, অন্য শিফটে ২২২

এছাড়াও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট ও শিক্ষক প্রতিনিধি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত প্রায় ৬৩ জন সিনেটরের মেয়াদ উত্তীর্ণ। এসময় সিনেট নির্বাচন করা অবিচার ও অন্যায়। এতে আরো বলা হয়েছে, শোকের মাসে এই নির্বাচন ক্যামেফ্লেজ তৈরি করতে পারে। সেজন্য সিনেট পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত সিনেট নির্বাচন স্থগিত চাওয়া হয়েছে। 

তবে গত বছরের ডিসেম্বরে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের আমলে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতারা সিনেট, সিন্ডিকেট সহ সকল গণতান্ত্রিক পর্ষদের নির্বাচন দাবি করলে পাল্টা ওই সময়ে নির্বাচন না করার জন্য দাবি জানান বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নেতারা। অভিযোগ উঠেছে সে সময়ের শীর্ষ স্থানীয় শিক্ষরাই এখন নির্বাচন চান। গত ২৪ জুন সিনেট সভায় বাজেট অনুমোদন সহ বিভিন্ন নীতিমালা পাস হয়। সেসময়ও সিনেট নির্বাচন চাননি কেউই।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৯৭৩ সালের প্রণীত জাবির অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভিসি প্যানেল নির্বাচন ও রাষ্ট্রপতি মনোনীতি ব্যক্তিকে নিয়ে কোষাধ্যক্ষের এমন ষড়যন্ত্র নজিরবিহীন ও অগ্রহণযোগ্য। কোষাধ্যক্ষের মতো শীর্ষ দায়িত্বে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এমন তথ্য পাচার ও ষড়যন্ত্র শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 কোষাধক্ষ্য রাশেদা আখতারকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ও ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি। 

এবিষয়ে সাময়িক উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ১২ আগস্ট সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন সুষ্ঠু করার আগে আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না।

গত ২ মার্চ অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব ও ১৭ এপ্রিল থেকে উপাচার্যের সাময়িক দায়িত্ব পান অধ্যাপক নূরুল আলম। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence