ঢাবিতে গবেষণার চেয়ে শ্রান্তি বিনোদনে খরচ বেশি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২১ অর্থ বছরে গবেষণার চেয়ে শ্রান্তি বিনোদনে খরচ বেশি করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরের সংশোধিত এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ঢাবিতে শ্রান্তি বিনোদনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। একই অর্থ বছরে গবেষণায় বরাদ্দ ছিল  ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে শ্রান্তি বিনোদনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই খাতে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। একই অর্থ বছরে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি ৩ লাখ টাকা। তবে এই অর্থ বছরে গবেষণা খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। 

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেট অধিবেশনে উত্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দীন আহমেদ।

উত্থাপিত বাজেটে দেখা যায়, ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বাজেট থেকে ৬৭১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশন খাতে। যা মোট ব্যায়ের ৭২.৮৫ শতাংশ। এই অর্থ বছরের জন্য গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: নিরাপত্তা শঙ্কায় বাকৃবির নওমুসলিম ছাত্রী

বাজেট অধিবেশনে গবেষণা প্রসঙ্গে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘‘গবেষণাধর্মী কর্মকাণ্ডকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে প্রথমবারের মতো গবেষণা-প্রকাশনা মেলার আয়োজন করা হবে। এবারের প্রতিষ্ঠা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য “গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা” ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে পথ নির্দেশনামূলক এই গবেষণা প্রকাশনা মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহীত দু'শতাধিক গবেষণা প্রকল্প, প্রায় অর্ধশত গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণা জার্নাল প্রদর্শিত হবে। প্রতিবছর এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে এবং শ্রেষ্ঠ গবেষক ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিস স্কলারশিপ-এর আওতায় পিএইচ.ডি. ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য ইতোমধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪১ জন তরুণ শিক্ষক বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। তাদের অর্জিত জ্ঞান ও গবেষণা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান সমুন্নত করবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অর্থ সহায়তায় এ মুহূর্তে প্রায় পাঁচশতটি বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে। মানসম্মত গবেষণাকর্মকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য নীতিমালার আলোকে শিক্ষকদের অর্থ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।’’

অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘‘উন্নয়নের জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করতে এমফিল/পিএইচ.ডি’র জন্য গবেষণা বৃত্তির অর্থের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। উচ্চতর পদে নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য শিক্ষকদের পিএইচ.ডি ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা জুলাই ২০২৩ থেকে কার্যকর হবে। এসব উদ্যোগ ও কর্মপ্রয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও গবেষকদের মাঝে গবেষণা-সংস্কৃতি তৈরিতে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।’’


সর্বশেষ সংবাদ