ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

টাকা পরিশোধ করেও ছাত্রলীগের বাধায় সিট পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

বিজয় একাত্তর হল
বিজয় একাত্তর হল  © সংগৃহীত

নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেও ছাত্রলীগের বাধায় হলের বরাদ্দকৃত সিটে উঠতে পারছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, হলের  ‘বড় ভাইরা’ তাদের উঠতে নিষেধ করেছেন। বারবার অভিযোগ করা হলেও হল প্রশাসন গা ছাড়া ভাব দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভু্ক্তভোগীরা। 

জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর হলের সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৩০৭ জন শিক্ষার্থী সিট বরাদ্দ পান। এদের মধ্যে প্রথম বর্ষের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। টাকা পরিশোধ করেও ছাত্রলীগের বাধায় প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থীদের কেউই বরাদ্দ পাওয়া সিটে উঠতে পারেননি।

আরও পড়ুন- জুতাপেটার নির্দেশ দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হলে প্রথম দুই মেয়াদে (৬ বছর) প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড. এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া। ওই সময়ে সিট বন্টন হল প্রশাসনই করতো। এতে যোগ্যরাই সিটে উঠতে পারতো। তবে সে সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সিট নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকবার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কঠোরতায় তারা তা করতে পারেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের গত মাসের ২৬ অক্টোবর হল প্রসাশন থেকে সিট বন্টন করে দেওয়া হয়। কিন্তু সিট বরাদ্দ পাওয়ার পরেও আমরা সিটে উঠতে পারছি না।

আরও পড়ুন- অস্ত্রসহ আটক ছাত্রলীগ নেতা রনির ২ বছরের সাজা মওকুফ

সিটে উঠতে না পারার কারণ সম্পর্কে তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের ‘বড় ভাইয়েরা’ আমাদের নিষেধ করে দিয়েছে যে তোমরা ওইসব রুমে উঠবে না। যখন আমাদের প্রয়োজন হবে তখন সিটে উঠবে।

“তোমরা যে সিট বরাদ্দ পেয়েছো সেটাতে উঠতে পারবে না।”

প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমাদের ‘পলিটিক্যাল বড় ভাইয়েরা’ হল প্রসাশন কর্তৃক দেওয়া সিট অবৈধভাবে দখল করে আছেন। তারা চাচ্ছেন হল কমিটি (ছাত্রলীগের) দেওয়ার আগে আমরা যাতে সিটে উঠতে না পারি। আমরা সিটে উঠলে তাদের রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করার লোক থাকবে না।

হলের প্রভোস্ট সম্পর্কে এই শিক্ষার্থী বলেন, আমার এক বন্ধুর পলিটিক্যাল রুমে সিট পড়েছে। এটা পরিবর্তন করার জন্য হল প্রভোস্টের কাছে গেলে তিনি বলেন, পলিটিক্যাল রুমের সিট পরিবর্তন করবা কেন? যেখানেই সিট পড়বে সেখানেই তো রাজনীতি করতে হবে। রাজনীতি করা ছাড়া এই হলে সিট হবে না।

প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সিট বরাদ্দ পাওয়ার পরেও উঠতে না পারার বড় কারণ ছাত্রলীগ। কারণ আমরা সিটে উঠলে ওদের মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়ার মতো লোক থাকবে না।

আরও পড়ুন- চবিতে দুই ভর্তিচ্ছুকে পেটাল ছাত্রলীগ

তবে এ বিষয়ে জানতে হল কমিটির পদপ্রত্যাশী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা এই বিষয়টি অস্বীকার করেন। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী ও হল কমিটির পদপ্রার্থী আবু ইউসুফ বলেন, আমার যারা অনুসারী তারা হলে উঠে গেছে। অন্য কেউ শিক্ষার্থীদের সিটে উঠতে বাধা দিতে পারে কিন্তু আমরা এই কাজ করছি না।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের অনুসারী ও হল কমিটির পদপ্রত্যাশী কামরুজ্জামান লিখন বলেন, আমাদের অলরেডি বেশিরভাগই সিটে উঠে গেছে। এক্ষেত্রে কাউকে পলিটিক্যালি কোন বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

লেখক ভট্টাচার্য্যের আরেক অনুসারী ও হল কমিটির পদপ্রত্যাশী রাজিব আহমেদ বলেন, আমরা দ্বিতীয় বর্ষের আগে সিটে উঠিয়ে তারপর প্রথম বর্ষের ছাত্রদের উঠাবো। আগামী ২৯ তারিখের পরে পর্যায়ক্রমে সিটে তোলা হবে। এক্ষেত্রে তাদের কোন প্রকার বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, হলের শিক্ষার্থীদের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। ওরা গণরুম বুঝে দিতে চায়। উপাচার্যকে ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের সিটে তুলে দেওয়া হবে।

হলের সিটে উঠতে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ বাধা দিচ্ছে, এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার কাছে এই বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। হলে থাকলে রাজনীতি করতে হবে, এক শিক্ষার্থীর এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, আমি এই কথা বলিনি। এটা মিথ্যা কথা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence