ঢাবির অনলাইন পরীক্ষা যেভাবে হবে, ভিডিও টিউটোরিয়াল প্রকাশ

তিন পর্বের প্রথম পর্বটি তৈরি করে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুষদ এবং বিভাগগুলোতে পাঠানো হয়েছে
তিন পর্বের প্রথম পর্বটি তৈরি করে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুষদ এবং বিভাগগুলোতে পাঠানো হয়েছে  © ফাইল ফটো

দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সশরীর পরীক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে অনলাইনে নিতে বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেই পরীক্ষা নেওয়া হবে না জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের অনেক শিক্ষার্থী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে। সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ ভালো নাও থাকতে পারে। তাই এসব শিক্ষার্থীকে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য নিকটস্থ উপজেলা শহর কিংবা অন্যত্র যেতে হয়। দেশে কঠোর লকডাউন শুরু হলে সেক্ষেত্রে তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে অনলাইনেও পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অনলাইনে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে পরীক্ষা নেওয়া হবে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা ইতিমধ্যে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল নির্দেশনা তৈরি করে, তা সংশ্লিষ্ট অনুষদ এবং বিভাগগুলোতে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও আছে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে অনলাইনে যেভাবে নেওয়া হবে পরীক্ষা, নির্দেশিকা প্রকাশ

এদিকে, অনলাইনে এই পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হবে, এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাবির সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন টিচিং এন্ড লানিংয়ের উদ্যোগে তিন পর্বের প্রথম পর্বটি তৈরি করে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুষদ এবং বিভাগগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঢাবির অনলাইন পরীক্ষায় যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়লে যা করবেন

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার–সংক্রান্ত
জুমে জয়েন করার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই নামের পরিবর্তে কেবল পরীক্ষার রোল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। যদি কোনো পরীক্ষার্থী এর ব্যত্যয় ঘটায় সে ক্ষেত্রে প্রত্যবেক্ষকদের একজন তাকে রিনেম করে দেবেন। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে জুমে জয়েন করতে হবে। প্রতিটি পরীক্ষার অন্তত ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কমিটি গুগল ক্লাসরুমের স্ট্রিমে জুমের আইডি পাসওয়ার্ড এবং জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য অন্তত তিনটি মোবাইল নম্বর পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই ভিডিও সচল রেখে দৃশ্যমান থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

উত্তরপত্র–সংক্রান্ত
অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত উত্তরপত্র ব্যবহারের সুযোগ নেই বিধায় উত্তরপত্রের কাভার পৃষ্ঠার এডিটেবল সফট কপি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর অন্তত এক দিন আগে গুগল ক্লাসরুমের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হবে। পরীক্ষা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত পরীক্ষার খাতার অনুকরণে এই কাভার পৃষ্ঠা। প্রস্তুত করবেন। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রয়োজনীয় তথ্য ওই সফট কপিতে পূরণ করে প্রিন্ট করবেন অথবা সেটি প্রিন্ট নিয়ে হাতে পূরণ করবেন অথবা প্রিন্টার না থাকলে এ–ফোর সাইজের সাদা কাগজে তার অনুলিপি প্রস্তুত করে রাখবেন। উত্তরপত্র স্ক্যান করার সময় এই পাতাটিকে প্রথম পাতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা এ–ফোর সাইজ কাগজে নিজ হাতে প্রশ্নের উত্তর লিখবে এবং উত্তরপত্রের প্রতি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠা নম্বর এবং পরীক্ষার রোল নম্বর লিখতে হবে।

উত্তরপত্র জমা দেওয়া–সংক্রান্ত
পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের তাদের উত্তরপত্র স্ক্যান করে/ছবি তুলে একটি সিঙ্গেল পিডিএফ ফাইল আকারে গুগল ক্লাসরুমের যে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছিল সেই একই অ্যাসাইনমেন্টের বিপরীতে অ্যাটাচমেন্ট আকারে (কাভার পৃষ্ঠাসহ) পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার ১০ থেকে ৩০ মিনিট (বিভাগ/ইনস্টিটিউট কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত) সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। একজন পরীক্ষার্থী একটির বেশি ফাইল আপলোড করতে পারবে না। আপলোডকৃত ফাইলের নামকরণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই একটি কমন ফরম্যাট ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে পরে সব ফাইল ডাউনলোড করে কোনো ফোল্ডারে সংরক্ষণ করার পর কোনো পরীক্ষার্থী কোনো ফাইল আপলোড করেছে, তা নির্ণয় করা দুরূহ হয়ে পড়বে। ফাইলের নামের ফরম্যাট হতে হবে *কোর্স কোড_পরীক্ষার রোল নম্বর’। বিষয়টি অবশ্যই আগে থেকে পরীক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে (গুগল ক্লাসরুমের স্ট্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে) এবং পরীক্ষা শুরুর আগে প্রত্যবেক্ষকেরা পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে আবার অবহিত করবেন।

উত্তরপত্রের স্ক্যানকৃত stream ফাইলটি অ্যাসাইনমেন্টের বিপরীতে অ্যাটাচ করা হয়ে গেলে অ্যাসাইনমেন্টটি ‘টার্ন ইন’ করার বিষয়ে প্রত্যবেক্ষকেরা বারবার সতর্ক করবেন। উত্তরপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর প্রত্যবেক্ষকেরা সব পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র জমা দেওয়া এবং টার্ন-ইন করার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এটি নিশ্চিত হওয়ার পরই একজন পরীক্ষার্থী জুম-মিটিং ত্যাগ করতে পারবেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে গুগল ক্লাসরুমে উত্তরপত্র জমা না নিয়ে পরীক্ষা কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো একটি ইনস্টিটিউশনাল ই–মেইল আইডিতেও পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র ই–মেইলে অ্যাটাচমেন্ট আকারে প্রেরণ করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পরীক্ষা কমিটির উপস্থিত সদস্যের অনুমতির প্রয়োজন হবে।


সর্বশেষ সংবাদ