গায়ে ডাকসুর টি-শার্ট, তবুও ঢাবি ছাত্র হাফিজের লাশ ‘বেওয়ারিশ’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মে ২০২১, ০৯:১৭ PM , আপডেট: ২৪ মে ২০২১, ০৯:১৭ PM
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে পাওয়া গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের লাশ। অথচ তার গায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) লোগো সম্বলিত টি শার্ট ছিল। সে হিসেবে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে শনাক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু লাশ মর্গে ছিল আটদিন। এ নিয়ে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তথ্যগুলো জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ প্রশ্ন তুলেছেন।
রবিবার (২৩ মে) রাতে ঢাকা মেডিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র হাফিজুরের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ দাবি করেছে- নিজেই গলায় দা চালিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তবে এ দাবি না মেনে হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর কারণ নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন৷
তার অভিযোগ, মর্গে হাফিজুর রহমানের লাশটি অজ্ঞাতনামা হিসেবে ছিল। ঘটনাক্রম কয়েকটি প্রশ্নের সামনে নিয়ে আসে। তার গায়ে ডাকসুর লোগো সম্বলিত টি-শার্ট ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় জিডি করা হয়েছে। শাহবাগ থানায় জানানো হয়েছে। অথচ ঘটনার কোনো ফয়সালা হয়নি।
সাদ্দাম বলেন, শাহবাগ থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ পেশাদারিত্ব দেখাতে পারেনি, শহীদ মিনারে পাওয়া লাশটি হাফিজুর রহমানের হতে পারে। পেশাদার ও দায়িত্বশীল বাহিনী হিসেবে সামনে আসা উচিত ছিল তাদের। এ ঘটনায় দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ সময় এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে তিনি, ঘটনার দিন হাফিজুর যাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছিল, অবিলম্বে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।
হাফিজের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাবি প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন
মানববন্ধনে প্রশাসনকে অভিভাবকসুলভ আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বটা কী! আপনাদের দায়িত্ব আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু সেটাতে আপনারা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। আপনাদের বলব, প্লিজ আপনারা আরেকটু অভিভাবকসুলভ আচরণ করুন, আমাদের নিরাপত্তা দিন। যাতে আমরা স্বাধীনভাবে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করতে পারি।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম একশনের সভাপতি লিজাইনুল ইসলাম রিপন, ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের সভাপতি তানজীম আল আলামিন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ নোমান, সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটির সভাপতি তানজির আল ফারাবী প্রমুখ।
মানববন্ধনের তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. হাফিজুরের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের এবং মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।
২. ঘটনার আগমুহূর্তে হাফিজুরের সঙ্গে যে বন্ধুরা ছিল, তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনতে হবে।
৩. হাফিজুরের লাশ নিয়ে পুলিশ সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজকে দায়িত্বে অবহেলার জবাব দিতে হবে।
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কী পদক্ষেপ নেবে সেই নকশা প্রকাশ করতে হবে।