রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউজিসি-পিএসসিতে সদস্য নিয়োগের দাবি
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১২ PM , আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৬ PM
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হতে ইউজিসি ও পিএসসিতে সদস্য নিয়োগ না দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় ইউজিসিতে সর্বনিম্ন একজন এবং পিএসসিতে সর্বনিম্ন দুইজন সদস্য নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। তারা দাবি করেন, ইউজিসিতে সর্বনিম্ন একজন এবং পিএসসিতে সর্বনিম্ন দুইজন সদস্য নিয়োগ দিতে হবে।
এ সময় রাবি স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজিব বলেন, আমরা যে আন্দোলনে দাঁড়িয়েছি, এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও জনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, কিন্তু ঢাকাকেন্দ্রিক বৈষম্য আমাদের সেই স্বপ্নে বাধা সৃষ্টি করছে। ইউজিসি ও পিএসসিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও বৈষম্যমূলক। আমরা দাবি জানাই, ইউজিসিতে অন্তত ১ জন এবং পিএসসিতে অন্তত ২ জন প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দিতে হবে। এই দাবি পূরণ না হলে প্রয়োজনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আইসিটি সেন্টারের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, রাবি থেকে পূর্বে ইউজিসি এবং পিএসসিতে নিয়োগ রাখা হতো। কিন্তু এই বছর ২৪-এর গণবিপ্লবের পর সরকার এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত ইউজিসি এবং পিএসসিতে একজনকেও নিয়োগ দেয়নি। ইউজিসির ভূমিকা শিক্ষার মান এবং শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেখানে একজনও রাবি থেকে নিয়োগ নেওয়া হয়নি। পিএসসিতে বিসিএসসহ বিভিন্ন ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তারাও ঢাকাকেন্দ্রিক থাকার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়।
ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইয়ামিন হোসেন বলেন, আমরা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে চেয়েছি বাংলাদেশের সমস্ত বৈষম্য দূর হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে গবেষকদের তালিকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। বিগত দিনগুলোর কথা চিন্তা করলে দেখা যায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য হয়েছে কিন্তু এইবার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৭/১৮ জন নিয়োগ পেলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজ পর্যন্ত একজনকেও ইউজিসি বা পিএসসিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, এটা কি বৈষম্য নয়? এই কারণেই কি আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি? এই বৈষম্যকে দূর করতে আমাদের ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলন করবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না এই বৈষম্য দূর করা হবে আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা চাই দেশের সবখানে বৈষম্যমুক্ত হোক।
প্রসঙ্গত, আগামী রবিবারের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা পরিলক্ষিত না হলে আন্দোলন আরো কঠোর হবে বলে জানান তারা। এ সময় শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।