জমকালো আয়োজনে চলছে ইডেন কলেজের সার্ধশতবর্ষ উদযাপন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৪৭ PM , আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫৪ PM
নাচ-গান আলোকসজ্জা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতিতে আনন্দমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত ইডেন মহিলা কলেজের ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান।
আজ শনিবার( ৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। পরবর্তীতে শুরু হয় আগত অতিথিদের বক্তৃতা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ব্যস্ততার কারণে তিনি আসতে পারেন নি। পরবর্তীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি।
এছাড়াও ইডেন মহিলা কলজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিন সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপস, শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই কলেজের যে ইতিহাস ১৮৭৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ এই ১৮ একর জায়গার মধ্যে এসে আজকে ইডেন মহিলা কলেজ নামে পরিচিতি পেয়েছে। দেড় শত বছর এরই মধ্যে এই কলেজ পেরিয়ে গিয়েছে এবং এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই এই অঞ্চলের নারীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বলতম প্রাক্তন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ সকালে এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে মুঠোফনে শুভেচ্ছা জানিয়েছন।এই প্রতিষ্ঠান থেকেই পাশ করেছেন লীলা নাগ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মত নারীরা যাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয় এদেশের নারীরা। কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী সানজিদা খাতুনসহ আরও অনেকে।
এসময় তিনি আরও বলেন, নারী শিক্ষায়, নারী ক্ষমতায়নে, নারীদের অগ্রযাত্রায় আজকে বাংলাদেশ যে জায়গায় আছে সেজন্যে এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য। আমরা আমাদের শিক্ষাকে সর্বস্তরেই আমরা বিশ্বমানে উন্নীত করতে চাই। আমরা শেখ হাসিনার হাতেই যুগোপযোগী একটি শিক্ষানীতি পেয়েছি সেটাকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য পরিকল্পনা করছি।
আরও পড়ুন: ৩৫ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কবির বিন আনোয়ারের বৈঠক আজ
সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এসেছেন বহু প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তারা এখানে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, এমন আয়োজনে আসতে পেরে তারা খুবই খুশি। ইডেন মহিলা কলেজ সবসময়ই তাদের কাছে একটি আবেগের জায়গা।
ইডেন মহিলা কলেজের ২০০৭-০৮ শিক্ষা বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন জানান, অনেক বছর পর এখানে আসলাম। খুবই ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানটি অনেক জমকালো হয়েছে। সাধারণত খুব কমই এমন অনুষ্ঠানে আসার সুযোগ হয় আমাদের। ২০১৫ সালের পর এই আসলাম এটা আসলে শশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি আসার মতো। আগের থেকে ইডেনের তেমন কোনো পরিবর্তন দেখছি না। ভালো লাগছে।
দর্শন বিভাগের ১৯৮৯-৯০ বর্ষের শিক্ষার্থী আসফিয়া রহমান জানান, আমি ৩০ বছর আগে আমি ইডেন থেকে বের হয়ে গেছি। এখন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। আসার সুযোগ তেমন হয় না। তবে আজকের এই সার্ধশতবর্ষ উদযাপন করতে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। এধরণের অনুষ্ঠান বার বার হোক। দীর্ঘদিন পরে এখানে আসতে পারাও একটা ভাগ্যের বিষয়। আমরা খুবই আনন্দিত। এখন ইডেনের চারপাশে বড় বড় ভবন, আরও হল হয়েছে শিক্ষার্থী বেড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।
অনুষ্ঠানে কলেজের প্রাক্তন ১৮ জনকে উত্তরীয় পরিয়ে বিশেষ সংবর্ধণা ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন-জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, ভাসা সৈনিক সিদ্দিকা জামান, শিক্ষাবিদ ড. সনজীদা খাতুন, এ এন রাশেদা, ড. আয়েশা বেগম, সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান, শিক্ষাবিদ ফাহমিদা খাতুন, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ফেরদৌসী মজুমদার, দিলারা জামান, ডলি জহুর, মুনিরা ইউসুফ মেমী, বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়লা হাসান, মাহফুজা খানম, বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশনের জিএম ড. ইসমত মির্যা, নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, ক্রীড়াবিদ নার্গিস আরা এ্যানি ও চিকিৎসক শেহরিন এফ সিদ্দিকা।