জাবিতে গণরুম থেকে তুলে নিয়ে ২ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

অভিযুক্ত ফয়সাল মারুফ
অভিযুক্ত ফয়সাল মারুফ  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে গণরুম থেকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই হলের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে ওই হলের বি ব্লকের ৩৫১ (১/২) নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত ফয়সাল মারুফ দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি এর আগেও সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ইমরান ও একই বর্ষের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুল ইসলাম পিকুল।

জানা যায়, গত তিনদিন আগে ৫০ ব্যাচের মারুফ ও রাকিব ভুক্তভোগী ইমরানকে ডেকে নিয়ে সেক্রেটারির গ্রুপে কারা রাজনীতি করতে চায় তাদের তালিকা দিতে বলে। কিন্তু তিনদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও সে ফোন রিসিভ করেনি। এর প্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার দুপুরে তাকে ডেকে ৩৫১(১/২) নং রুমে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

গণরুমের প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান,  মারুফকে ঐ রুমে রড নিয়ে ঢুকতে দেখা যায়। তখন ঐ রুম থেকে চিৎকার চেচামেরির আওয়াজও শোানা যাচ্ছিলো।

গতকাল শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রভোস্ট কমিটির সদস্যরা গণরুমে আসলে ভুক্তভোগীর একাধিক সহপাঠী মারধরের ঘটনাটি বর্ণনা করেন। যা তারা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে শুনেন বলে দাবি করেন।

ভুক্তভোগীদের সহপাঠী ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ঘটনার সময় আমরা সবাই গণরুমে ছিলাম। তখন দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মারুফ গণরুমের দরজায় লাথি মেরে ইমরানকে ডেকে নিয়ে যায়। প্রথমে তাকে হলের ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে ৩৫১ (১/২) নং রুমে নিয়ে আবারও রড দিয়ে মারধর করা হয়। এছাড়াও মারুফ প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের এসে চড় থাপ্পর ও গায়ে জুতা ছুড়ে মারে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের নামের লিস্ট করতে বলে। কিন্তু এই কাজে দেরি হলে তারা আমাদের রুমে ডেকে নিয়ে বকা ঝকা করে। তবে আমাদের সাথে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

                                               মারুফ তার সিটের পাশে সব সময় রড রাখে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা 

অন্য ভুক্তভোগী মাহবুবুল ইসলাম পিকুলও রড দিয়ে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগীরা মার খাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও ৩৫১(১/২) রুমের বিছানায় একটি রড পাওয়া গেছে। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত মারুফকে রুমে ও ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই ব্যবস্থা নিবো। 

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমি হলের প্রভোস্টের ফোন পেয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে সেখানে যাই। তবে এখানে অভিযুক্ত কাওকেই খুঁজে পাইনি। আমি হলের প্রভোস্টকে দ্রুত তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ