ঢাবি শিক্ষককে তলবের নিন্দা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট’র

ঢাবি শিক্ষককে তলবের নিন্দা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টে’র
ঢাবি শিক্ষককে তলবের নিন্দা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টে’র  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) প্রক্টর কর্তৃক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এর ব্যক্তিগত তথ্য তলবের নিন্দা জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখা। বুধবার (১৯ অক্টোবর) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদ এক যুক্ত বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১৭ অক্টোবর ২০২২, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রক্টর অফিস থেকে দুজন কর্মচারী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অফিসে যায়। তারা প্রক্টরের কথা জানিয়ে অফিস কর্মকর্তার কাছে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান এর স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানাসহ ব্যক্তিগত কিছু তথ্যের খোঁজ করে। ঐদিন সকালে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কে’র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিরাপত্তাসহ আবাসিক হলগুলোকে শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব করে তোলার দাবীতে এবং ক্যম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় ব্যর্থ প্রক্টরের পদত্যাগ দাবী করে স্মারকলিপি দেয়। 

আমরা এটাও জানতে পেরেছি ঘটনার দিনই রাত সাতটায় অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান এর স্থায়ী ঠিকানায় একজন পুলিশের এসআই গিয়ে উপস্থিত হয়। ‘স্থানীয় গণ্যমান্য’ ব্যক্তিদের তালিকা করার বাহানায় পুলিশ তার কাছে বিভিন্ন তথ্য চায়। এটা আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না প্রক্টর সংকীর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব থেকে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান এর সাথে এই আচরণ করেছে। অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান সবসময়ই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সরাসরি অংশগ্রহণও করেছেন। ফলে সবসময়ই তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চক্ষুশূল হয়েছেন। 

আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত তথ্য তলবের নিন্দা ঢাবি শিক্ষকের, প্রতিকার আশা করেন না

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায়ই তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালিয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিরোধী মতের উপর তীব্র আক্রমণ চালাচ্ছে, মারধর করছে। প্রশাসন নীরব থেকে এরূপ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পরোক্ষ সমর্থন যোগাচ্ছে। ফলে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান এর মত গনতন্ত্রমনা শিক্ষক যখন প্রশাসনের চোখে আঙ্গুল দিয়ে তাদের গাফিলতি দেখাচ্ছে তখন প্রশাসন স্বৈরাচারী কায়দায় তাকেই মানসিকভাবে হয়রানি করতে চাচ্ছে। এতে প্রশাসনের জনবিরোধী বৈশিষ্ট্য উন্মোচিত হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিভাগীয় অফিস থেকে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত তথ্য তলব করার প্রক্টরের এ রকম কোনো অধিকার কিংবা এখতিয়ার নেই। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রক্টর তারই সহকর্মীর সাথে এরূপ এখতিয়ার বহির্ভূত ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ করছে। আমরা অতীতে দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু শিক্ষকদের সাথেই নয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরও নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করে। প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে নানাভাবে দমন করার চেষ্টা করা হলে শিক্ষার্থীরা সেটাকে তীব্রভাবে প্রতিরোধ করবে। এই ভূখণ্ডে ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহাসিক ধারা বলে দেয় শিক্ষার্থীবিরোধী প্রশাসন কখনোই বেশিদিন টিকতে পারেনি বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট তাদের প্রতিবাদ বিবৃতিতে দাবি জানায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এরূপ এখতিয়ার বহির্ভূত ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের জন্য আমরা প্রক্টরকে অফিশিয়ালি ক্ষমা চাওয়ার এবং পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আহবানও জানায় তারা। 


সর্বশেষ সংবাদ