ঘুমিয়ে কমবে ওজন! জেনে নিন সঠিক কিছু পদ্ধতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:১৮ PM , আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৩১ PM
অতিরিক্ত ওজন কারও কাম্য নয়। শরীরের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে বেড়ে গেলে তা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই অস্বস্তিকর। ওজন বাড়লে আপনার দৈহিক সৌন্দর্য কমে। ডাক্তাররা প্রায়ই সতর্ক করে দেন যে অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকী ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
যাদের ওজন বেশি, তারাই বোঝে ওজনের যন্ত্রণা। ওজন কমাতে প্রতিনিয়ত অনেক কাঠখড় পোড়ায় তারা। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ থেকে শরীরচর্চা, খেয়াল রাখতে হয় সব দিকেই। কিন্তু কেউ যদি আপনাকে বলে যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওজন ঝরিয়ে ফেলা যায়, তার চেয়ে বড় সুখবর কি আর কিছু হতে পারে?
ঘুমের মধ্যেও ওজন কমানো সত্যিই কি সম্ভব? আমরা ঘুমিয়ে থাকলেও ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের মতো কাজ চালিয়ে যায়। ফলে কিছু ক্যালরিও খরচ হয়। শক্তিও খরচ হয়। তাছাড়াও সারারাত আপনার শরীরে বাড়তি পানি আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ঘামের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাই ‘ওয়াটার ওয়েট’ ঝরে যায়। সে কারণেই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি ওজন মাপেন, তাহলে খানিকটা কম দেখাবে আপনার ওজন। এসব কারণেই রাতের পর রাত ভালো ঘুম না হলে শুধু যে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে তা নয়, আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
সেটা কিভাবে?
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনার শরীরে মানসিক চাপের হরমোন—মানে কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। বেশি মাত্রায় কর্টিসল শরীরে থাকলে তা আমাদের হজমশক্তির ওপর প্রভাব ফেলে। শরীরের বিপাকহারও কমে যায় এসব কারণে। বেশি রাত অব্দি জেগে থাকলে উল্টাপাল্টা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে। তাই ওজন বাড়তেও বেশি সময় লাগে না।
ঘুমের মধ্যেও কী করে ক্যালরি ঝরাবেন? জেনে নিন কিছু পদ্ধতি
* আপনি যদি ওয়েট ট্রেনিং করেন, তাহলে তা সকালের বদলে সন্ধ্যাবেলা করতে পারেন। শরীরের বিপাকহার শরীরচর্চার পর ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বেশি থাকবে। তাই ঘুমের মধ্যেও শরীরে ক্যালরি বেশি খরচ হবে।
* বেশির ভাগ মানুষই রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঘুমোতে চলে যান। সঙ্গে সঙ্গে না ঘুমোলেও বিছানায় গড়িয়ে ফোন ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়ে যায়। এই অভ্যাস ছাড়তে হবে। খাওয়ার পর অন্তত ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে না ঘুমোনোই শ্রেয়। তাতে খাবার হজম ভালো হয়। বিপাকহারও বাড়ে। ফলে ঘুমের মধ্যে ওজন ঝরার কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: সমস্যা যখন চুল পড়া, জেনে নিন করণীয়
* শরীরচর্চা করার পর যদি ঠাণ্ডা পানিতে স্নান করতে পারেন, তাহলে শরীরে থেকে ল্যাকটিক এসিড বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমাদের শরীরে ব্রাউন ফ্যাটের পরিমাণে খুব কম থাকে। কিন্তু এটি সক্রিয় থাকলে শরীরের বিপাকহার বেড়ে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ক্যালরি ঝরতে পারে। ৩০ সেকেন্ড যদি বরফ-ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন, তাহলে শরীরের ব্রাউন ফ্যাট সক্রিয় হয়ে ঘুমের মধ্যেও ৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত ঝরাতে পারে।
* গ্রিন টি শরীরের বিপাকহার বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে যদি তিন কাপ চা খান, তার মধ্যে শেষ কাপটি ঘুমের আগে খেলে ঘুমের মধ্যে ৩.৫ শতাংশ বেশি ক্যালরি ঝরতে পারে। তাই রাতে খাওয়াদাওয়া ও ঘুমোনোর মাঝে এক কাপ গ্রিন টিতে চুমুক দিতেই পারেন।
* রাত জেগে মোবাইলে ওয়েব সিরিজ দেখার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এই অভ্যাসের কারণে রাতে তিন-চার ঘণ্টার বেশি ঘুম হয় না। ওজন বেড়ে যাওয়ার পেছনে কিন্তু এই অভ্যাস দায়ী। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা