শিক্ষক সমিতিকে পুঁজি করে ভিসি হয়েছেন আপনি: আনু মুহাম্মদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০২:৩৬ PM , আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৫:৫৫ PM
শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ‘সোমবারের মধ্যেই’ পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষকদের ‘প্রতীকী অনশন’ কর্মসূচি থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
‘শিক্ষার্থীদের তাজা প্রাণের বিনিময়ে উপাচার্যের গদি রক্ষা নয়’ স্লোগান নিয়ে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেখানে অন্তত ২০ জন শিক্ষক সংহতি জানিয়ে ‘প্রতীকী অনশন’ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
কর্মসুচিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে উদ্দেশ্য করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালেয়ের (জাবি) অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “সম্মানবোধ থাকলে আজকের মধ্যেই আপনি পদত্যগ করেন। আপনার জন্য অনেক ক্ষতি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের।
আরও পড়ুন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার সিঁড়ি ঢাবি শিক্ষক সমিতি
“আপনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বা ফেডারেশনের আন্দোলনকে পুঁজি করে উপাচার্য হয়েছেন। অনেক অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে। এসমস্ত বিষয় নিয়ে নিজেকে আর না পচিয়ে আপনি অবিলম্বে আজকের মধ্যেই পদত্যাগ করুন। প্রাণ বাঁচুক, বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচুক। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অব্যাহত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক।”
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংহতি জানালেও শিক্ষক সমিতি বা ফেডারেশনগুলোর ‘নীরব’ ভূমিকার সমালোচান করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর জন্য শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনশন করছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার সিঁড়ি গবেষণা ও গবেষণা প্রবন্ধ
তারা শাবিপ্রবির জন্য আন্দোলন করলেও এটা সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মেরামত করার জন্য, বড় ধরনের পরিবর্তনের লড়াইকে শক্তিশালী করছে। সেজন্য আমরা তাদের প্রতি ভালোবাসা ও সংহতি জানাই।
“কিন্তু শিক্ষক সমিতি বা ফেডরেশনগুলোর ভূমিকা লজ্জাজনক। তারা শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব করার চাইতে যেভাবে সরকারের বা প্রশাসনের স্বার্থ রক্ষাথে নিয়োজিত আছে, তাতে শিক্ষকদের মর্যাদা সংকটে ফেলেছে।
“আমরা সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের প্রতি আহ্বান জানাই, শিক্ষক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করা উচিত।”
বর্তমানে ‘মেরুণ্ডহীন ব্যক্তিদের’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তারা বিশেষ সুবিধা পান বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এ অধ্যাপক।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষক সমিতি: ‘শাবিপ্রবির আন্দোলন সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে’
“আজকে পরিস্থিতিটা এমন, উপাচার্য নিয়োগের জন্য তাদের মেধা, শিক্ষা, শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার জন্য তাদের ভূমিকা বিচার্য বিষয় নয়। বিচার্য বিষয় হচ্ছে তারা কতটা আনুগত্য দেখাতে পারবেন সরকারের প্রতি।”
প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া অন্য শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, নৃবিজ্ঞান বিভগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ফাহিরনা দূর্রাত, ব্যবস্থাপনা বিভাগের তাহনিমা খানম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী।