ঢাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন
প্রচারণায় সরব সাদা-নীল দল, নির্বাচনে নেই গোলাপীরা
- লিটন ইসলাম
- প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:০১ PM , আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৩০ AM
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ও আওয়ামী লীগপন্থী নীল দল অংশগ্রহণ করছে। তবে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে বাম সমর্থিত গোলাপী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
শিক্ষক সমিতি নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থী ও অনুসারীরা। নিজেদের বক্তৃতা-ওয়াদার ফিরিস্তি দিয়ে ভোটারদের মন গলানোর চেষ্টা করছেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। যাচাই-বাছাই করে প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন- আওয়ামীপন্থী প্যানেলের শীর্ষ পদে নেই রদবদল
নীল দলের প্যানেল থেকে এবার সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক পদে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ পদে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন, সহ-সভাপতি পদে অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম।
এছাড়া ১০টি সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিজনেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মঈন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ জেএম শফিউল আলম ভূইয়া, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজা ইয়াসমীন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসিরুদ্দিন মুন্সি, ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আলম, রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার এবং পদার্থ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ।
অন্যদিকে, সাদা দল থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. ইয়ারুল কবীর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম। সহ-সভাপতি পদে প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ পদে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন, যুগ্ম সম্পাদক পদে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. দাউদ খাঁন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়া ১০টি সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অধ্যাপক ড. আশেকুল আলম রানা, অধ্যাপক ড. এ এস এস আমানুল্লাহ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা আল মামুন, অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ, অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান।
আরও পড়ুন- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার সিঁড়ি ঢাবি শিক্ষক সমিতি
গত বছর সাদা দল নির্বাচন বয়কট করায় নীল দল বিনা ভোটে জয়লাভ করেছিলো। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষক সমিতিতে নীল দলের প্যানেল জয়ী হয়ে আসছে।
নির্বাচন নিয়ে সাদা দলের আহ্বায়ক ড. লুৎফর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষকদের কাছে যাচ্ছি। আমাদের প্যানেলের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য তাদেরকে যৌক্তিক কারণ বলছি। বিএনপি সারাদেশে নির্বাচন বর্জন করেছে আপনারাও করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লুৎফুর রহমান বলেন, জাতীয় রাজনীতির সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের এটা হচ্ছে পেশাজীবি সংগঠন। জাতীয় কোনো কর্মসূচির সাথে মিল রেখে আমরা কোনো কর্মসূচি দেই না। নির্বাচন বর্জন করার কোনো চিন্তা নাই।
সাদা দলের সভাপতি পদপ্রার্থী ড. ইয়ারুল কবির জানান, প্রচার-প্রচারণা ভালোই চলছে। আমরা শিক্ষকদের রুমে রুমে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষকদের জন্য কাজ করব। গুণগত শিক্ষা কিভাবে বাড়ানো যায় সেগুলো নিয়ে দাবি-দাওয়া সরকারকে দিব।
নীল দলের সভাপতি পদপ্রার্থী ড. রহমত উল্লাহ তাদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও নির্বাচনী প্রচারণা সম্পর্কে বলেন, খুবই ভালো সাড়া পাচ্ছি। একাডেমিক কার্যক্রম সমুন্নত রেখে যতটুকু প্রচারণা করা যায় ততটুকুই করছি। তিনি বলেন, নীল দল বিজয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। ভবিষ্যতের পথ চলাকে আরো সুগম করার জন্য নীল দলের বিজয় একান্ত ভাবে কামনা করি।
এদিকে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে এইবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বাম সমর্থিত গোলাপী দল। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. এম এম আকাশ বলেন, এবার আমরা নির্বাচন করছি না। কারণ আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পেলে পরবর্তীতে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।