ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩২ PM , আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৭ AM

দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদল। এসময় 'হয় ধর্ষকের ফাঁসি দে, নইলে গদি ছাইড়া দে' স্লোগান দেন তারা।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তাদের ব্যানার ফেস্টুনে লিখিত স্লোগানগুলো ছিল 'ধর্ষকরা নিপাত যাক, নারী সমাজ মুক্তি পাক', 'ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলাশ হবে না', 'ধর্ষণকারী নরপিশাচ আমরা করব তার বিনাশ', 'বোন তোমার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই', 'তুমি কে আমি
কে আছিয়া আছিয়া', 'হয় ধর্ষকের ফাঁসি দে, নইলে গদি ছাইড়া দে'।
সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস ইশা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসেও যেখানে মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, সেখানে এখন মেয়েদের অধিকার, মেয়েদের ধর্ষণ, মেয়েদের সাইবার বুলিংয়ের মতো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এদেশে যদি আমরাই নিরাপদ না থাকি তাহলে দেশের জন্য আমরা কী কাজ করব? মেয়েরা এখন কোথাও নিরাপদ না। একটি শিশুকেও ছাড়া হচ্ছে না, তাকেও ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা চাই এইসব ধর্ষণ, হয়রানি, সাইবার বুলিং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোধ করা হোক।
মানববন্ধনে রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জহির শাওন বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী নারীর প্রতি যে বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন আমরা দেখছি সেই স্বপ্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা এবং একটি বিশেষ গোষ্ঠীর উস্কানির মাধ্যমে সেই স্বপ্ন বৃথা হতে চলেছে। ৫ আগস্টের পরে ফ্যাসিস্ট দোসরদের বহিষ্কার করার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত অনেক ফ্যাসিস্ট দোসর বহিষ্কার করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ও প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় নারী শিক্ষার্থীদের আরো অনিরাপদ করে তুলছে। ধর্ষণের পেছনে অনেকে পোশাকের দোষ দেয়, কিন্তু শিশু আছিয়ার পোশাকে কী দোষ ছিল? ফুল তুলতে যাওয়া সেই ছোট্ট শিশুর কী দোষ ছিল? তাই আমি বলতে চাই, আপনারা দ্রুত আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান এবং ধর্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার কার্যকর করুন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনামল ও বর্তমান শাসনামলের বিচার ব্যবস্থার মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না। পার্থক্য শুধু একটি জায়গায় আগে হাসিনা শুধু মুজিব পরিবারের কথা বলতো আর এখন দুর্ভিসন্ধিমূলক কথাবার্তা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা চলছে। জুলাই আগস্টে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল দেশে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আমরা তার বিপরীত চিত্র দেখতে পারছি। কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য মানুষ রক্ত দেয়নি। দেশে বিচার ব্যবস্থা শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে না আনতে পারলে বর্তমান সরকারের অবস্থা শেখ হাসিনার থেকেও ভয়াবহ হবে।
তিনি আরো বলেন, আছিয়ার ঘটনা মিডিয়াতে এসেছে তাই আমরা তার প্রতিবাদ করছি। কিন্তু এইরকম শত শত আছিয়া প্রতিনিয়ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করব ধর্ষকদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য যাতে আর কোনো কুলাঙ্গার ধর্ষণ করার সাহস না পায়।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী। সর্দার রাশেদের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।