বৈষম্যবিরোধী ও শিবিরকে নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করলো ছাত্রদল 

ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন  © টিডিসি সম্পাদিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বানে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা  হয়েছে। সেখানে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মতবিনিময় সভায় দাওয়াত না দেয়া নিয়ে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। এ নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেছে ছাত্রদল। 

আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সাথে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, তাই তাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান রয়েছে বলে তিনি জানান। 

জানা গেছে, সভাটি বিকেল চারটায় শুরু হয়ে প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা অবধি চলে। এটি গ্লোরিয়াস পার্টি সেন্টার, কাটাবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছাত্ররাজনীতির সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরর বিষয়ে নাছির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। তবে আমরা দেখেছি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সকল রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে শুধু তারাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, তারাই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

আরও পড়ুন: ছাত্রদলের সভায় দাওয়াত পায়নি শিবির-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

‘ছাত্রদল দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত, সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের  নেতা -কর্মী- সমর্থক আছে,  শুধু  আমরাই ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে  সর্বস্তরের ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করি। সেই হিসাবে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সংস্কার এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যাতে মুষ্টিমেয় কিছু ছাত্রদের হাতে বন্দী না হয়ে যায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’ 

তিনি আরও বলেন, আমরা যেহেতু আরও অনেকগুলো ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি, আমরা সেই ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে মতবিনিময় করে তাদের মতামতও জানার চেষ্টা করেছি। আমরা দেখেছি, সবাই আমাদের সাথে একমত যে গণ-অভ্যুত্থানের পরে সবার প্রতিনিধিত্বের বদলে একটা অংশের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করার আহ্বান জানাচ্ছি। 

শিবিরকে সভায় না ডাকার বিষয়ে তিনি বলেন, শিবিরের রাজনৈতিক পলিসি হচ্ছে -পার্টলি ওপেন, মোস্টলি সিক্রেট। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজনীতিকে গোপনীয়তার দিকে নিয়ে যাওয়া। এইজন্য শিবিরের সিক্রেট উইং ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। 

নাছির বলেন, জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীনও তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছে, আবার গণ-অভ্যুত্থানের পরেও তারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবীতে ষড়যন্ত্র করেছে।  শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, যা একটি আত্মঘাতী পদক্ষেপ। আমরা ছাত্ররাজনীতির সামগ্রিক স্বার্থে শিবিরের কার্যক্রম নিয়ে সন্দিহান।


সর্বশেষ সংবাদ