রাজধানীতে বার ভাংচুর করে টাকা ও শতাধিক মদের বোতল লুট ছাত্রলীগের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৪০ PM , আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ PM
বারে মদ পানের পর টাকা না দিয়ে উল্টো ভাঙচুর করে কয়েক লাখ টাকা ও শতাধিক মদের বোতলসহ বিভিন্ন জিনিস লুট করার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে মহাখালীর জাকারিয়া বারে এই ঘটনা ঘটে। এরপর এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে রাজধানীর বনানী মডেল থানায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েলের একদল অনুসারী ওই বারে মদ পান করার জন্য যান। মদ পান করার পর বিল চাইলে, বিল না দিয়ে তখন বারের ম্যানেজারকে মারধর করা হয়।
এক পর্যায়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন বারের ম্যানেজার। কিন্তু তারপরও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়লকে তারা ফোনে জানালে হল থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে পাঠিয়ে আটককৃতদের উদ্ধার করতে বলে। তখন তারা বারের গেটে তালা বদ্ধ দেখতে পেয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।
জানতে চাইলে জাকারিয়া বারের দায়িত্বরত ব্যক্তি উজ্জল মিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিতুমীর কলেজের কিছু ছেলে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। তারপর আমাদের বারে এসে হামলা করে। এসময় ক্যাশ ভেঙে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় ৭৫ ইঞ্চি একটি টিভি, ২০/২৫টি চেয়ার ভাঙচুর করে। এসময় বারে থাকা ৪০ বোতল ফরেন হুইস্কি যার প্রতি বোতলের দাম ১০ হাজার টাকা করে প্রায় ৪ লাখ টাকার হুইস্কি লুট করে।
তিনি আরও বলেন, এসময় কেরুর ৮০ বোতল মদ লুট করে যার প্রতি বোতল মদের নাম ২ হাজার ২০০ টাকা করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মদ লুট করে। মোট ১২০টি মদের বোতল যা প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মদ লুট করে। এছাড়াও আমাদের রিসিপশন ভেঙেছে, সেখানে ফটোকপির মেশিন, দুইটা কম্পিউটার ভেঙেছে। এ ঘটনায় ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে মামলা হয়েছে বনানী থানায়। আমরা আশা করি বনানী থানা এটার ব্যবস্থা নেবে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাসুম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এরকম একটি ঘটনায় বনানী থানায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কাজ চলছে।
ভাঙচুর এবং লুটের অভিযোগের মূল হোতা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন রাহুল, সুলতান ও শাওন, সহ-সম্পাদক শাওন ও সাব্বির, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নিলয় সেন, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মামুন, কর্মী কাউসার, শাহিন মাতব্বর প্রমুখ।
ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন রাহুল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনার দিন রাতে আমি বাড়ি থেকে হলে আসি। এমন সময় খবর পাই আমার কিছু বন্ধু-বড় ভাইয়ের সঙ্গে বারের লোকজনের ঝামেলা হয়েছে। আমি বিষয়টা মিমাংসা করতে যাই। কিন্তু আমি মেইন ঘটনায় ছিলাম না। আমার নামে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
আরেক অভিযুক্ত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি এ বিষয়ে জড়িত নয়। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এরকম একটি ঘটনা আমাকে বনানী থানার ওসি জানিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘটনা ক্যাম্পাসের বাহিরে করেছে। এটা তাদের ব্যাক্তিগত অপকর্ম। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।
জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়ল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ঘটনাটি আজকে শুনেছি। আমি জানতামনা। আমার কোনো অনুসারী জড়িত নয়।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ধরনের কর্মকান্ড ছাত্রলীগের আদর্শের বিপরীত। এটা যদি ঘটে থাকে তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবো।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী ইনান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ঘটনাটি জানতাম না। আমি খোজঁ-খবর নিচ্ছি। কেউ জড়িত থাকলে ব্যাবস্থা নেবো।