শিক্ষক আছে, তবুও একযুগ ধরে শিক্ষার্থীশূন্য সরকারি এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি
- এম এ কালাম
- প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ০৫:৪৮ PM , আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫, ০৫:০৫ PM

আছে স্কুল ভবন, রয়েছে কক্ষ ও চেয়ার-টেবিল। শিক্ষক আছেন ৩ জন, কাগজে-কলমে চলতি বছরে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী ৫৬ জন হলেও ২০১৩ সাল থেকে অর্থ্যাৎ একযুগ ধরে ময়মনসিংহের গোসাসনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী আসে না বলে জানায় গ্রামবাসী।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোসাসনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জহিরুল আলম নামের এক শিক্ষক-শিক্ষার্থীশূন্য শ্রেণিকক্ষে বসে আছেন। আর অফিসকক্ষে বসে আছেন সহকারী শিক্ষক লাকী আকতার। বিদ্যালয়ে আসেননি স্কুলটির প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান। তবে সহকর্মীদের ফোন পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তিনি।
গোসাসনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ গ্রামে খানার সংখ্যা (পরিবারের সংখ্যা) কম রয়েছে। এ এলাকার বেশির ভাগ বাচ্চা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে ও মাদ্রাসার প্রতি এলাকাবাসীরও ঝোঁক রয়েছে। খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ স্কুলটির নাম নিয়ে রয়েছে বিড়ম্বনা। এ ছাড়া আজকে অসুস্থ থাকার কারণে স্কুলে আসতে দেরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত গোসাসনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৮২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর জাতীয়করণ হয় ২০১৩ সালে। কাগজে-কলমে চলতি বছরে বিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৬ জন। তালিকায় দেখা যায়, শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা যথাক্রমে ১০, ১১, ১০, ৭, ৭ ও ১০ জন। কাগজে শিক্ষার্থী দেখালেও ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী আসে না বলে জানায় গ্রামবাসী।
গোসাসনা গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলটি এভাবেই চলছে। গ্রাম ও স্কুলের নাম বললে মানুষ বুঝতে পারেন না, নাম নিয়ে সবাই হাসাহাসি করেন। পাশের গ্রামের নাম বলে নিজ গ্রামের পরিচয় দিয়ে থাকি। তাই নাম পরিবর্তনসহ স্কুলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহী দিলশাদ এলীন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি জানি। তবে শিক্ষক ও এলাকাবাসী আমাদের কোনো সহযোগিতা করেন না। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্কুলের বিষয়ে আরও খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।