গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া

আবেদন ফি নিয়ে অসন্তোষ, পৃথক পৃথক মেধাতালিকার দাবি

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি আগামী ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত হবে। এরপর ১৭ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি আবেদন শুরু হবে। গুচ্ছের কেন্দ্রীয় ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্যতা আলাদা হওয়ায় আবেদন পৃথক পৃথকভাবে নেয়া হবে। তবে মেধাতালিকা দেয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত উপাচার্যদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ভর্তিচ্ছুদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা গেছে। শুরুতে ১৫০০ টাকা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার পর আবার ৫০০ টাকা করে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন নিয়ে বড় সমস্যা তাদের। ভর্তিচ্ছুদের দাবি, পৃথক পৃথক আবেদন করতে হলে পৃথক পৃথকভাবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকা দিতে হবে।

প্রথমে ভর্তিচ্ছুদের সুুবিধার কথা বিবেচনা করে একটি আবেদনের মাধ্যমে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হলেও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ভর্তি কমিটি। এতে করে গত শিক্ষাবর্ষের ন্যায় এবারও শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা গুনতে হবে। ফলে ভোগান্তি কমলেও আর্থিক ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।

জয় রয় নায়েক নামে খুলনার এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার গুচ্ছে মার্ক ৫১.৭৫। এখন যদি গুচ্ছের সব ভার্সিটিতে আবেদন করি তাইলে টাকা লাগবে ১১০০০। এখন যদি কোন ভার্সিটিতে সাবজেক্ট আসলো না, ফাও আমার টাকাগুলো গেল। এমতাবস্থায় আমার পরিবারকে কি বোঝাবো? গুচ্ছের কাছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা আজ জিম্মি।

আরও পড়ুন: গুচ্ছের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ১৪ অক্টোবর

তন্ময় দাঁস নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, গুচ্ছ কমিটি আবেদনের টাকা যদি প্রতিটা ভার্সিটির জন্য আলাদা আলাদাভাবে নিতে পারে; তাহলে মেধাতালিকাও প্রতিটা ভার্সিটির জন্য আলাদা আলাদাভাবেই দিতে হবে। কারণ এতে করে আমাদের যেখানে ভালো লাগবে সেই ভার্সিটিতেই থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

তন্ময় বলেন, তাদের যেহেতু কেন্দ্রীয়ভাবে আবেদন নিতে এতই সমস্যা, তাহলে কষ্ট করে আর মেধাতালিকাটা কেন্দ্রীয়ভাবে করার দরকার নেই। মেধাতালিকা দেখে আমরা আমাদের নিজ দায়িত্বে যেখানে খুশি সেখানে ভর্তি হতে পারবো। আমরা আর তাদের হাতের পুতুল হতে চাই না।

সৈয়দ রবিউল ইসলাম সাইমন নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আলাদা আবেদন হলে মেধাতালিকাও গতবারের মত আলাদা দিতে হবে। না হলে কেউই পছন্দের ভার্সিটি বা বিষয় কিছুই পাবে না। সবই যখন আলাদা মেরিট কেন একসঙ্গে? সবই যখন আলাদা তাহলে গুচ্ছের কি দরকার আর?

জানা গেছে, আগামী ১৪ অক্টোবর প্রকাশিতব্য পূর্ণাঙ্গ ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন প্রসেস এবং বিশ্ববিদ্যালয় চয়েজ নিয়ে বিস্তারিত বলা থাকবে।

এদিকে, গুচ্ছ কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো এখনো পরিষ্কার নয় অনেক ভর্তিচ্ছু। দিয়া রহমান নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আলাদা আবেদন করলে মেধাতালিকা একসাথে দেবে কীভাবে? সবাই তো সব ভার্সিটিতে আবেদন করবে না। কেউ ৫ টায়, কেউ ১০ টায়। তাহলে মেরিট একসাথে কীভাবে?

জাকিয়া অর্থী নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, গুচ্ছ কমিটির সিদ্ধান্ত জানার পর এখন আমার মনে হচ্ছে, হয় আমার আত্মহত্যা করতে হবে না হলে আমার কিডনি বিক্রি করতে হবে। কোথাও চান্স না হওয়ায় এমনিই বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। এখন দেখতেছি আমার  আর কোন পথ নেই। আবেদন করার পর কোথাও সিলেক্ট হলে না হয় বাসা থেকে টাকা চাওয়া যেত। কিন্তু আবেদন করতেই যদি এখন কাড়িকাড়ি টাকা লাগে তাহলে এখানেই সব শেষ।


সর্বশেষ সংবাদ