বিবিসি

বিশ্বের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর তালিকায় ময়মনসিংহের সানজিদা

সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া
সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া  © সংগৃহীত

২০২২ সালের জন্য বিশ্বের ১০০ জন অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এ তালিকায় খ্যাতনামা সংগীত শিল্পী বিলি আইলিশ, ইউক্রেনের ফার্স্টলেডি ওলেনা জেলেনস্কা, বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়াদের সঙ্গে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহের সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া।

মনোনীত ১০০ নারীকে নিয়ে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিবিসি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। চারটি বিভাগে এই ১০০ নারীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এগুলো হলো রাজনীতি ও শিক্ষা; সংস্কৃতি ও খেলাধুলা; অধিপরামর্শ ও সক্রিয়তা এবং স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান। সানজিদা ইসলাম স্থান পেয়েছেন অধিপরামর্শ ও সক্রিয়তা বিভাগে।

সানজিদা ইসলাম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পড়াশোনা করছেন কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছেন তিনি। নান্দাইল পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালে ২০১৪ সালে তিনি তাঁর ছয় সহপাঠীকে নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলে সাড়া ফেলেছিলেন।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে স্থান পাওয়া এই নারীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সানজিদা ইসলাম সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাল্যবিবাহ ঠেকাতে কাজ করেন তিনি, তার সহপাঠী ও শিক্ষকেরা।

আরও পড়ুন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

বিশ্বের যেসব দেশে এখনও প্রচুর বাল্যবিয়ে হয় বাংলাদেশ তার একটি। যে চিত্র পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন সানজিদা। সানজিদার মায়েরও বাল্যবিয়ে হয়েছিল। স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে জানতে পেরে এ নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন এই তরুণী।

কোথাও বাল্যবিয়ে হচ্ছে খবরে পেলে সানজিদা তার বন্ধু, শিক্ষক ও সহযোগিদের নিয়ে তা বন্ধের চেষ্টা করেন। প্রয়োজনে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা নেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা ও তার বন্ধুরা নিজেদের ঘাসফড়িংয়ের সদস্য বলে পরিচয় দেন।

সানজিদা এখনও ঘাসফড়িংয়ের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এখন ঘাসফড়িং গ্রুপের নতুন সদস্যদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এ পর্যন্ত তারা ৫০টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করেছেন বলে বিবিসি-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বিবিসির মর্যাদাসম্পন্ন তালিকায় স্থান পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ছোঁয়া বলেছেন, ‘আজ সকালেই খবরটি পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। আমি এই সম্মান পেয়ে আনন্দিত।’ সানজিদা ইসলাম ছোঁয়ার চাকরিজীবী বাবা আমিনুল ইসলাম ও গৃহিণী মা লিজা আক্তারও মেয়ের এ অর্জনে আনন্দিত ও গর্বিত।

২০১৯ সালে নান্দাইল পাইলট গার্লস হাইস্কুলে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের ‘হ্যালো চেক’ অনুষ্ঠানে বাল্যবিয়ের প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারেন ছোঁয়া। তখন তিনি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী, বয়স ১৬ বছর। এরপর থেকে বাল্যবিয়ে বন্ধে কিশোরী মেয়েদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ছোঁয়া।

ছোঁয়া বলেন, আমি মনে করি অল্প বয়সে বিয়ে করা যেকোনো মেয়ের জন্য খাঁচায় বন্দি থাকা জীবনের মতো। ময়মনসিংহে আমার আশপাশে একসময় বছরে ৪০-৫০টির মতো বাল্যবিয়ের ঘটনার কথা জেনেছি। তবে এখন সেই সংখ্যা ২-৩টিতে নেমে এসেছে। বাল্যবিয়ে বন্ধে আমরা ঘাসফড়িং থেকে যেভাবে কাজ করে এসেছি, তাতে শতভাগ না হলেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence