চাঁদপুর সরকারি কলেজে ফল উৎসব

চাঁদপুর সরকারি কলেজে ফল উৎসব
চাঁদপুর সরকারি কলেজে ফল উৎসব  © টিডিসি ফটো

বাহারি রকমের দেশীয় ফলের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করা এবং সংরক্ষণের লক্ষে প্রথমবারের মত চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্যোগে ফল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। রোববার (১২ জুন) সকাল ১০টায় কলেজ প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মধুমাসে চাঁদপুর সরকারি কলেজের এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। উৎসবে এসে ফলের যে সংগ্রহ দেখলাম তা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সংগৃহীত ফলগুলোর সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত থাকলেও এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে।

অনেকটা আফসোস করে তিনি বলেন, এর মধ্যে অনেক ফল আমাদের খাওয়ারও সুযোগ হয়নি। চাঁদপুর সরকারি কলেজ এখনো জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। আমাদের আশা, ফল উৎসবের এমন আয়োজন অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনুসরণ করবে এবং এসব ফলের সংরক্ষণের চেষ্টা করবে।

আরও পড়ুন: অসহায়দের মৌসুমি ফল ও শিশুখাদ্য দিল ডুসাউ

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ। তিনি বলেন, আমাদের এই ফল উৎসবের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে দেশীয় ফলের সঙ্গে পরিচিত করা এবং সরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা। আমরা জানি দেশে অনেক ফল রয়েছে এবং অনেক সম্ভাবনাও রয়েছে। আজকের আয়োজনে প্রায় ৪০টির বেশি ফল সংগ্রহ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব ফলের মধ্যে অনেক দেশীয় ফল নতুন প্রজন্ম চিনেই না এবং যেগুেলো প্রায় বিলুপ্তির পথে।

তিনি আরো বলেন, আজকের আয়োজনের মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরকে কারিকুল্যামের পাশাপাশি হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া। কারণ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা অনেক সময় নিজেরা হাতে কাজ করতে অভ্যস্ত না। ফল কিভাবে সংরক্ষণ, আবহাওয়া ও পরিস্থিতি অনুকুলে রেখে স্বাস্থ সম্মতভাবে উপস্থাপন করা যায়, তা শিক্ষার্থীদেরকে আলাদা একটি কক্ষে হাতে কলমে শেখানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বাহার। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মাসুদুর রহমান, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, প্রেসক্লাব সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসসহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারে উত্তপ্ত চুয়েট ক্যাম্পাস

ফল উৎসবে বিভাগ ভিত্তিক স্টলে সজ্জিত করা হয় প্রায় ৪৩ রকমের দেশীয় ফলের বাহার। স্টলগুলো আমন্ত্রিত অতিথিরা পরিদর্শন করেন।

বিভাগ ও ফলের তালিকা ছিল- বাংলা বিভাগ: বেতুন, বৈঁচি, বেলুম্ব, কাঠ বাদাম ও তালের শাঁস। ইংরেজি বিভাগ: আনার ও ডালিম। ইতিহাস বিভাগ: পেঁপে। সমাজকল্যাণ বিভাগ: কামরাঙ্গা, জাম্বুরা ও বেল। অর্থনীতি বিভাগ: কলা, ডাব ও নারিকেল। পদার্থবিদ্যা বিভাগ: তরমুজ। প্রাণিবিদ্যা বিভাগ: আমলকি, অড়বরই, বহেরা ও হরিতকি। রসায়ন বিভাগ: লটকন ও গাব। ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগ: ডেউয়া ও কাউ। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ: জাম ও সফেদা। দর্শন বিভাগ: নুইন্যা, করমচা ও গুটি জাম। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ: জামরুল, ডুমুর, দেশি খেজুর। ব্যবস্থাপনা বিভাগ: আম। হিসাববিজ্ঞান বিভাগ: লিচু ও পেয়ারা। গণিত বিভাগ: কাঠাল। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ: আনারস, ছাগলনাদি, আমড়া, বুতিজাম, জগডুমুর। ভূগোল বিভাগ: চালতা, তেঁতুল ও লেবু।

এছাড়া উৎসব চলাকালীন সময়ে কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ