মাদকে জড়িয়ে স্বপ্ন ভাঙছে ইবির নবীন শিক্ষার্থীদের
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ মে ২০২২, ১১:১৫ AM , আপডেট: ২৯ মে ২০২২, ১১:১৫ AM
অবৈধ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মাদকসেবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার ফলে মাদকের সরবরাহ বেড়েছে ক্যাম্পাসে। যখন স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলার কথা তখন বুদ হয়ে থাকছে নেশায়। এর দৌরাত্ম্য থামাতে না পারলে শিক্ষার্থীরা অন্ধকারে পতিত হবে বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষকরা।
মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতিক সময়ে ইবিতে মাদকের চাহিদা আগের চেয়ে বেড়েছে। গত কয়েক মাসে মাদক বিক্রি বেড়েছে চার/পাঁচ গুণ। ব্যবসায়ীরা মাদক ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেন। আবার শিক্ষার্থীরা এসে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যান। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকার মাদক ক্রয় করে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদক ব্যবসায়ী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আগের তুলনায় এখন মাদক বেশি ক্রয় করছে। আমরাতো ব্যাবসা করার জন্য বিক্রি করি। আমরা অনেকসময় ক্যাম্পাসে পৌঁছায় দেই আবার শিক্ষার্থীরা এসেও নিয়ে যায়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের রুম ও ছাদে, বঙ্গবন্ধু হলের সামনের পুকুর পাড়ে, ক্রিকেট মাঠ, জিয়া মোড় এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় লেক এলাকায় বসে মাদকের আসর। মাদকের আসরে প্রতিদিনই নতুন নতুন শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছেন।
গত বুধবার লুঙ্গীতে করে ১৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় বিশ্ববিদ্যায়ের প্রধান ফটক থেকে আনোয়ার জোয়াদ্দার নামের এক মাদক ব্যাবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। জব্দকৃত মাদকের মূল্য প্রায় পয়তাল্লিশ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: জিপিএ’র শর্ত বাড়ানোয় লাভবান হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
গত ২৩ মে বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড়ের ক্রিকেট মাঠে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে অজ্ঞান হয়ে যায় হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর কুরাইশি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় । অবস্থা গুরুত্ব হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক কুষ্টিয়া নিতে বলেন।
এছাড়া গত জানুয়ারি মাসে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞন ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী দস্তগীর হোসেন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভাগের সহযোগীতায় ঠাকুরগাও মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর ঈদের ছুটির পর ক্যাম্পাসে পুনরায় মাদক গ্রহণ শুরু করে এবং অস্বাভাবিক আচরণ করে। পরে তাকে পুনরায় মাদক পুনবার্সন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ভাতের মতো মাদক ছাড়া দিন চলে না। হলে ওঠার পরই খাওয়া শুরু করি। ছাড়ার চেষ্টা করলেও পারছি না।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা মাদক অভিযানে নেমেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আপনারা তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাহিরে আছি। ক্যাম্পাসে এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।