নতুন বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষাজট কমানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ

বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট
বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট  © ফাইল ছবি

করোনার কারণে উচ্চশিক্ষায় সৃষ্ট সেশনজট নিরসন করাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন বছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাজট থেকে উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) একটি গাইডলাইন দিলেও তা পালনে অনীহা দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে।

করোনার ধকল কাটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণ ফিরলেও সেশনজট কাটিয়ে উঠতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মনে কালো মেঘের সঞ্চার হয়েছে। করোনার কারণে শিক্ষাজীবন থেকে দেড় বছর হারিয়ে যাওয়ার ক্ষতি কীভাবে পূরণ করবেন সেটি নিয়েই চিন্তায় তারা। যদিও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবার কথা।

তথ্যমতে, করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দেড় বছর পর তা খুলে দেওয়া হয়। করোনাকালীন সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নিলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে। ইউজিসির নির্দেশনার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস শুরু করলেও পরীক্ষা না নেয়ায় শিক্ষার্থীরা পরের সেমিস্টারে যেতে পারেনি।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের সেশনজট তৈরি হয়েছে। এটি থেকে বের হয়ে আসতে হলে অবশ্যই শিক্ষাবর্ষ এবং সেমিস্টারের সময় কমাতে হবে। না হলে নতুন বছরেও সেশন জট লেগেই থাকবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পর যাতে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য একটি গাইডলাইন দিয়েছে তদারকি সংস্থা ইউজিসি। গত ২২ জুন দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গাইডলাইন সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ইউজিসি প্রদত্ত গাইডলাইনে সেশনজট কমাতে শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন ধরনের ছুটি বাতিল করা, একাডেমিক ক্যালেন্ডারের সময় কমিয়ে আনা, ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো, ক্লাসের সময় কমিয়ে আনা এবং প্রচলিত সময়ের চেয়ে কম সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য বিভিন্ন ছুটি পরিহার করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাধারণ বীমার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস

ইউজিসির দেয়া গাইডলাইন অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনুসরণ করলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় তা অনুসরণ করছে না। সেমিস্টারের সময় কমিয়ে চার মাস করার পরিবর্তে আগের মতো ছয় মাসের সেমিস্টার অনুযায়ীই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কীভাবে তাদের সেশনজট কমবে সে সংক্রান্ত কোনো গাইডলাইনও তৈরি করেনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

জানা গেছে, ইউজিসির গাইডলাইন অনুসরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছয় মাসের সেমিস্টার চার মাসে শেষ করার পরিকল্পনা করেছে। তাদের এই পরিকল্পনা জানিয়ে বিভাগগুলোকে চিঠিও দিয়েছে। তবে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা দেয়নি।

আরও পড়ুন: কনসার্টে শেকৃবি ছাত্রলীগ নেত্রীকে মারধর

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে সেটি কমাতেই আমাদের এই গাইডলাইন তৈরি করা। উন্নত বিশ্বে করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষার জট কমাতে যে ধরনের পরিকল্পনা করেছে আমরা সে ধরনের গাইডলাইনই দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গাইডলাইন মানার অনীহা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। যারা এই গাইডলাইন মানছে না তারা কি ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো চান না? যদি শিক্ষার্থীদের ভালো চেয়েই থাকেন তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের গাইডলাইন ফলো করবেন।


সর্বশেষ সংবাদ