মহানগর আওয়ামী নেতার আশ্বাসে রাবি ছাত্রলীগের আন্দোলন স্থগিত

  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান চাকরি প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার পৌনে ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে রাবি প্রশাসন, মহানগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও ছাত্রলীগের যৌথ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এদিন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও চৌধুরী মো. জাকারিয়া, রেজিস্টার আবদুস সালাম, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মতিহার থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস হোসেন ও সাদিকুল ইসলাম স্বপনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আলোচনায় বসেন।

আলোচনা শেষে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, 'আন্দোলনে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা ছিলেন তৎকালীন সময়ের ত্যাগী ছাত্রনেতা। তারা তাদের প্রত্যাশার জায়গা থেকেই আন্দোলন করছেন। এর আগে একজন প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট টিমের অধিনায়ক ছিল। সেটি মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে। এখানে একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রশ্ন তুলছেন, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কেন নিয়োগ দেওয়া হলো!'

ডাবলু সরকার আরো বলেন, 'নিয়োগের বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে আমরা এমপি এবং মেয়রের সহযোগিতায় সেটি প্রত্যাহারের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে কথা বলবো। এবং এটি প্রত্যাহার হলেই নিয়োগের দুয়ার আবার খুলে যাবে। যারা আবেদন করেছেন তাদের এখানে রিজিক থাকলে নিয়োগ হবে। আমাদের আলোচনার পর আন্দোলনকারীরা আমাদের ওপর আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিত করেছেন।'

জানতে চাইলে চাকরি প্রত্যাশী রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের অবিভাবক। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করি। ভবিষ্যতেও করবো। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন চলমান বিষয়টি দ্রুত সমাধান করবেন। তাদের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আমাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, 'রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ববৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যে নিষেধাজ্ঞা আছে তা তুলে নেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী চাকরির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অনেকের পরীক্ষা শেষ হয়েছে, ভাইভা বাকি রয়েছে। সেগুলো সম্পূর্ণ করেই নিয়োগ দেওয়া হবে।'

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সুপারিশ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। সোমবার দুপুরে রেজিস্ট্রার দপ্তরের অ্যাডহকে একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে ছয়জনের একটি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে বাহিরে এসে রাত ৯টায় উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির চাকরি প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা।

প্রায় ১২ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকাল আটটায় উপাচার্য ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়। এদিন সকাল নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। দুপুরে রাবি প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা বসেন তারা। এক শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা বিবেচনায় ও উপাচার্য বুধবার আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করে।


সর্বশেষ সংবাদ