ইবিতে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বৈশাখীয়ানা উৎসব
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৮ PM , আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৮ PM

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ উদযাপন উপলক্ষে গ্রামীণ হালখাতার আদলে “বৈশাখে বর্ণে, সুরে, স্বাদে—উৎসব হোক হৃদয়জুড়ে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৈশাখীয়ানা ১৪৩২ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নবিতান-ইবি পরিসর’ এর উদ্যোগে দুদিনব্যাপী এই ‘বৈশাখীয়ানা-১৪৩২’ উৎসব শুরু হয়।
এ আয়োজনে তুলে ধরা হয়েছে বাংলার প্রাচীন গ্রামীণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পরম্পরার অনন্য রূপ। বৈশাখী মেলায় থাকছে ঐতিহ্যবাহী নাগরদোলা, চরকি, গরুর গাড়ি, দোলনা, পুতুলনাচ, পল্লীগীতি ও বাউল গানসহ নানা লোকজ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বিনোদনের পাশাপাশি থাকবে স্থানীয় ও ক্যাম্পাসের উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে হস্তশিল্প, মৃৎশিল্প, ঘরোয়া পিঠাপুলি, পান্তাভাত, দই-চিঁড়া এবং হারিয়ে যাওয়া নানা গ্রামীণ খাবারের আয়োজন। এছাড়াও প্রাচীনকালে বাজারের মধ্যকার বটগাছ কেন্দ্রিক যে মেলার প্রচলন ছিল তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বটতলায় উন্মুক্ত মঞ্চের মাধ্যমে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, এখানে রয়েছে মোট ২২টি উদ্যোক্তা স্টল, যার মধ্যে পাতে বাঙালিয়ানা, রোহিনি’ কালেকশন, বৈশাখের চিনিরঙ, রূপরত্ন, ডেজার্ট ডায়েরি, সুতির পরশ, মাচাং, মধু মশলা, রসনা বিলাশ, অস্থির খানাপিনা সহ হরেক রকম খাবার ও কসমেটিকস সামগ্রীর দোকান। রয়েছে পান্তাভাত, লুচি, পায়েস, পিজ্জা, জিলাপি, বিখ্যাত তিলের খাজা, মিষ্টি সহ নানা খাবারের আয়োজন। এছাড়াও রয়েছে চুড়ি, কানের দুল, গলার হারসহ মেয়েদের বিভিন্ন গহনা, ফেসওয়াশ, বডিস্প্রে, হিজাব, গামছা ও লুঙ্গি, ক্যালিগ্রাফি এবং বিভিন্ন বইয়ের দোকান।
মেলার আয়োজন ঘিরে দিনভর ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা মেলা ঘুরে ঘুরে উপভোগ করেছেন বিভিন্ন স্টলের সুস্বাদু খাবার এবং নিজের ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য কিনছেন পছন্দমতো লোকজ পণ্য ও অন্যান্য জিনিসপত্র। গান, চরকি, নাগরদোলাসহ বৈশাখী আয়োজনগুলোর প্রতি তাদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলছেন, ক্যাম্পাসে এই ধরনের আয়োজন প্রতিদিনের ক্লাস-পরীক্ষার একঘেয়েমি কাটাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও এ ধরনের আয়োজন বাঙালিদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
স্বপ্নবিতান ইবি পরিসরের আহ্বায়ক আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেই শহরে বড় হয়েছি। গ্রামীণ হালখাতাগুলো কেমন হয়, কি কি আয়োজন থাকে, আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি কেমন হতে পারে তা অনেকেরই অজানা। আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন আমাদের খুবই সহযোগিতা করেছে। যেহেতু এটা আমাদের প্রথমবারের মতো আয়োজন, ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি হতে পারে। আশা করি সামনে আরও সুন্দরভাবে গুছিয়ে এ ধরনের উৎসব আয়োজন করতে পারবো।’