ডেইলি ক্যাম্পাসে সংবাদের পর বেঁচে গেল দুর্লভ বৃক্ষ ‘ক্যাসিয়া জাভানিকা’
- কুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১২ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১২ PM

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রতিষ্ঠাকালীন ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপনের জন্য দুর্লভ প্রজাতির ক্যাসিয়া জাভানিকা গাছের ডালপালা কেটে পুরো গাছটিই স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপন কমিটি। তবে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত ‘কুবিতে ভিত্তিপ্রস্তরের ‘বলি’ দুর্লভ বৃক্ষ ক্যাসিয়া জাভানিকা’ সংবাদের পর সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবেশদ্বারের লাল সোনাইল গাছ থেকে CoU চত্বর বরাবর সিঁড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। এতে গাছটির প্রায় সবকটি ডাল কেটে ফেলা হলেও বিরল এই বৃক্ষটি রক্ষা করতে ভিত্তিপ্রস্তরের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। সিঁড়ির পথ পরিবর্তন করে গাছটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর গোড়ায় পুনরায় মাটি দেওয়া হয়েছে এবং কাটা অংশে কাঁচা হলুদ লাগানো হয়েছে।
ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপন প্রকল্প কমিটির আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এমএম শরিফুল করিম বলেন, ‘বিশেষ প্রজাতির এই গাছটিকে বাঁচানোর জন্য আমরা ভিত্তিপ্রস্তরের ডিজাইন পরিবর্তন করে ‘ওয়াই ডিজাইন’ দিয়েছি। গাছটির অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে। কেউ একজন এসে বলেছিল, এতে সৌন্দর্যের কিছুটা ঘাটতি হতে পারে, তবে গাছটি এভাবেই থাকবে।’
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা গাছটি স্থানান্তর না করে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিকল্প পথ অনুসরণের দাবি জানিয়েছিল। এই দাবির পক্ষে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেয় অভয়ারণ্যের সহ-সভাপতি রঞ্জন ভৌমিক, বিএনসিসি প্লাটুনের ক্যাডেট আন্ডার অফিসার মো. সামিন বখশ সাদী এবং শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম।
গাছ সংরক্ষণের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে মো. সামিন বখশ সাদী বলেন, ‘একটি ছোট্ট চারা রোপণ করলেই বৃক্ষরোপণের সফলতা আসে না; দরকার সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ। ৮ জানুয়ারি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিয়ে বিরল প্রজাতির এই গাছটি রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়। তবে শিকড় ও ডাল ছাঁটার আগেই যদি বিকল্প পথ নেওয়া হতো, তাহলে আরও ভালো হতো। ভবিষ্যতে যেকোনো প্রকল্পের ক্ষেত্রে আরও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত, যাতে পরিবেশের ক্ষতি এড়ানো যায়।’
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকে ক্যাম্পাসে গাছ লাগান, কিন্তু সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করতে পারেন না। গাছটি দুর্বল ছিল, তাই একে কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রশাসনের উচিত ছিল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা।’
গাছ সংরক্ষণের এই উদ্যোগকে শিক্ষার্থীরা ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশগত ভারসাম্য ও সঠিক পরিকল্পনার গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।