২০২৪ সালে ইবি প্রশাসনে নতুন মুখ যারা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

স্মৃতি মুছে যায়, সম্পর্কের নাম বদলে যায়। যার নাম বিচ্ছেদে রূপান্তরিত হয়, সে একসময়ে অতীত বলে আখ্যা পায়। পৃথিবীতেবীতে কোনো কিছুই স্থির নয়। কালের পরিক্রমায় পুরাতন চলে যায়, আবির্ভাব ঘটে নতুনত্বের। সেই নতুন আবার একসময় জৌলুশ হারিয়ে নাম লিখিয়ে ফেলে পুরোনোর খাতায়। তদস্থলে দেখা যায় আবারও নতুনত্বের। অতীতকে পেছনে ফেলে নব উত্থানের মধ্যে দিয়ে মানুষ এগিয়ে যায়। ২০২৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদেও দেখা গেছে অনেক নতুন মুখকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে বিভাগীয় সভাপতি পর্যন্ত বিভিন্ন সন্ধান পাওয়া গেছে নতুন মুখের। ২০২৪ সালের এই নতুন মুখগুলো নিয়েই আজকেই আয়োজন।

উপাচার্য: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ১৯৮০-এর ১০(১) ধারা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাহিনুর ইসলামের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে তিনি ১৩তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন।

উপ-উপাচার্য: ২ ডিসেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাহিনুর ইসলামের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৮০ (সংশোধিত আইন, ২০১০) এর ১১(ক) (১) ধারা অনুসারে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ইবিতে সান্ধ্যকালীন নির্দেশনায় শাখা ছাত্রদলের ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ

ট্রেজারার: ডিসেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাহিনুর ইসলামের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৮০ (সংশোধিত আইন, ২০১০) এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে ট্রেজারার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ট্রেজারার পদে নিয়োগপ্রাপ্তির আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। 

প্রক্টর: এ বছরের ২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান। ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদ পদত্যাগ করায় ওই পদে আগামী ১ বছরের জন্য তাকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য।

ছাত্র উপদেষ্টা: ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুল ইসলাম। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল পদত্যাগ করলে ওই পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি। 

আরও পড়ুন: গুচ্ছ নয়, নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ইবির

সহকারী প্রক্টর: ৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বারী এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. খাইরুল ইসলাম এবং ৮ অক্টোবর নিয়োগ পান বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিন্নাতুল করিম।

টিএসসিসি পরিচালক: গত ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রর (টিএসসিসি) নতুন পরিচালক হিসেবে এক বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন।
 
আইআইইআর: গত ৯ অক্টোবর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইইআর) নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোছাইন। তিন বছরের জন্য তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রেস প্রশাসক ও আইসিটি সেল: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রেস প্রশাসক হিসেবে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মফিজুল ইসলাম ও আইসিটি সেলের পরিচালক হিসেবে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান আলী নিয়োগ পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: ইবিতে ‘সান্ধ্য আইন’ বাতিলের দাবি ছাত্র ইউনিয়নের

ডিন: ২০২৪ সালের শুরুতেই গত ১৬ জানুয়ারি কলা অনুষদের নতুন ডিন হিসেবে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন এবং আইন অনুষদের নতুন ডিন হিসেবে খন্দকার তৌহিদুল আনাম নিয়োগ পেয়েছেন। এরপর গত ৩০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের প্রথম নারী ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন।

এ ছাড়া গত ১৪ নভেম্বর বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান এবং ১৬ নভেম্বর জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. বাবলী সাবিনা আজহার।

বছরের শেষে এসে বিগত ৭ ডিসেম্বর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নতুন ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি। তারা প্রত্যেকেই আগামী ২ বছরের জন্য ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আরও পড়ুন: ইবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের অংশগ্রহণ রুখে দেওয়ার ঘোষণা শিবিরের

প্রভোস্ট: গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা হলের নতুন প্রভোস্ট হিসেবে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শামসুল হক সিদ্দিকী, বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট হিসেবে ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট হিসেবে আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশেদুজ্জামান, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট হিসেবে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট হিসেবে দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাদের এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নতুন প্রভোস্ট হিসেবে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ টি এম মিজানুর রহমান নিয়োগ পেয়েছেন।

বিভাগীয় সভাপতি: এ বছর বেশ কয়েকজন নতুন বিভাগীয় সভাপতিকে পেয়েছে ইবি। এর মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন। ২০ এপ্রিল আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি হিসেবে সহকারী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি হিসেবে সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি হিসেবে সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি হিসেবে সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফী এবং সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগের সভাপতি হিসেবে সহকারী অধ্যাপক মোছাঃ আসমা সাদিয়া রুনা নতুন সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষক সমিতির কার্যালয় ঘেরাও ইবি শিক্ষার্থীদের

এ ছাড়া গত ২১ অক্টোবর কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামান ও ফার্মেসি বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান। পরবর্তী সময়ে ২৭ অক্টোবর ইসলামের ইতিহাস ও  সংস্কৃতি বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিভাগটির অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী এবং ৩০ অক্টোবর চারুকলা বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান। এ ছাড়া ১১ নভেম্বর ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব পেয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ