কুবিতে হল ছেড়ে পালাচ্ছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা

  © সংগৃহীত

চলমান কোটা  আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ছাত্রলীগ বয়কটের ডাক। শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ছাত্ররাজনীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিতেও আলটিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে। 

এছাড়াও গতকাল রাতে হলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর দেখা মিললেও সকাল থেকে তাদেরকে আর দেখা যাচ্ছেনা বলে  জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা৷ তাঁরা বলছেন, ছাত্রলীগ হল ছেড়ে পালিয়েছেন। 

এদিকে হলে না থেকেও হলে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতা আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম। তিনি বলেন, আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। ছাত্রলীগ এমন কোন কাজ করে নি যে হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে পালাতে হবে। ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের সুখে, দুঃখে পাশে ছিল এবং থাকবে। 

ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা মোমিন শুভ বলেন, ক্যাম্পাস ছাড়ার মতো কিছু হয়নি। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় নেতা কর্মীরা এখন ঢাকা কেন্দ্রিক বেশি থাকে। 

হল গুলোতে খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি হলের কোন হলেই বর্তমানে ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীর উপস্থিতি নাই। গতকাল সকাল থেকেই তারা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ফরহাদ কাউসার, আহসানুল হক ও আরাফ ভুঁইয়াকে মারধরের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে তাদের সাথে কোন ক্লাস কার্যক্রমে অংশ নিবেননা জানিয়ে বয়কটের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও   হল থেকে অভিযুক্ত কয়েকজনের বালিশ, তোষক ও আসবাব পত্রও ফেলে দিয়েছেন তাঁরা।

হামলাকারী শিক্ষার্থীরা হলেন, পারভেজ মোশাররফ, রবিউল আলম রিয়াজ, রবিন দাস, আবদুল্লাহ আল মামুন,আখতারুজ্জামান পাভেল, বিশ্বজিত দাস, রাকিব, অর্নব সিংহ রায়, আসিফ এনতাজ রাব্বী, আশিকুর রহমান রাফি। 

কোটা আন্দোলনকারী তিন শিক্ষার্থী মারধরে নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সায়েম বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছু জানিনা, মাত্রই শুনলাম। 

এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদিক ছাত্র নেতা বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিনা এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়। সকল স্টেক হোল্ডার দের সাথে আলোচনার বিষয়। একপক্ষ সেটা বললেত হবে না।

এরা আগে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল বন্ধে ইউজিসি ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুপুর একটায় তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা । দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের  সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করতে হবে, পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা সহ বাস সেবা, বিদ্যুৎ, ওয়াইফাই আগের মত থাকতে হবে।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের সাথে একমত পোষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দীকি ও বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান মিলকি। তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা হলে নিরাপদ রয়েছে। যারা থাকতে চায় থাকতে পারবে। প্রক্টরিয়াল বডি এবং হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিবেন।

তবে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কক্ষে কর্মচারী পাঠিয়ে হল ত্যাগে নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। 


সর্বশেষ সংবাদ