বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ফেরা হলো না রিয়ার

রিয়া খাতুন
রিয়া খাতুন  © সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রিয়া খাতুন (২১)পড়াশোনা করতেন মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি তিনি দেশে এসেছিলেন। শনিবার (২ মার্চ) ফিরে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে। কিন্তু মালয়েশিয়া ফেরা হলো না তার। রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৪৬ জনের মধ্যে রিয়াও একজন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মেয়েকে হারিয়ে আর্তনাদ করছিলেন শিল্পপতি বাবা কুরবান আলী। তিনি নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানা রিয়া ফ্যাশনের মালিক। মেয়েকে হারিয়ে একেবারে নিস্তব্ধ তিনি। পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরা বিলাপ করছেন। স্বজনরা জানান, কুরবান আলীর দুই মেয়ে। বড় মেয়ের নামে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। সেই মেয়ে অকালে চলে গেলো।

কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে শুধু একা রিয়া নয়, তার দুই খালাতো বোন আলেশা (১৪) ও নুসরাত (১৮) মারা গেছেন। তাদের মধ্যে আলেশা রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত এবং ঢাকা সিটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার সংবাদ আসে ফায়ার সার্ভিসের কাছে। এরপর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ ঘটনায় অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

পরিস্থিতিকে ভয়াবহ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন, তাদের বেশিরভাগের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবাইকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ হতাহত বেশি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।


সর্বশেষ সংবাদ