শিল্পকর্মের মাধ্যমে মনের নান্দনিকতা প্রস্ফুটিত হয় : খুবি উপাচার্য

  © সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) চারুকলা স্কুলের আয়োজনে আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ৫ দিনব্যাপী ৭ম বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। বেলা ১১টায় চারুকলা স্কুলের আঙিনায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। 

এ সময় তিনি বলেন, শিল্পকর্মের সাথে মনের খোরাক জড়িত। শিল্পকর্মের মাধ্যমে মনের নান্দনিকতা প্রস্ফুটিত হয়। প্রতিটি মানুষের মধ্যে শিল্পীসত্ত্বা লুকায়িত রয়েছে। চারুকলা শিক্ষার্থীদের শিল্পীসত্ত্বা বিকশিত করার জন্য বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। এটি একটি অনন্য প্রয়াস। নিজেকে বিকশিত করার জন্য যথোপযুক্ত পরিবেশও প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের বিকশিত করতে চারুকলার শিক্ষকরা নিবেদিত হয়ে কাজ করছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করছে।

তিনি আরও বলেন, চারুকলার বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে। চারুকলা স্কুলের জন্য আলাদা একটি ভবন তৈরির বিষয়টি মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট ও একাডেমিক ভবনের সমস্যা সমাধানেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে রিসার্চ কোলাবরেশন হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক্সচেঞ্জ হচ্ছে। বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে শিক্ষকরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। নিজেদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে। এটি অত্যন্ত ভাল একটি দিক। তিনি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিকশিত করার এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের প্রধান মো. আমিনুল ইসলাম এবং ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন প্রধান রকিব হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক বেবী সুলতানা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের মধুরিমা সাহা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুল হাসান ও ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মনতোষ মন্ডল।
অনুষ্ঠানে চারুকলা স্কুলভুক্ত তিন ডিসিপ্লিন থেকে তিনজন শিক্ষার্থীকে ‘শিল্পী শশিভূষণ পাল গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের মো. সাইফুল্লাহ আবির, প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের মো. সাইমুম ইসলাম রাফি এবং ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের স্বাধীন মন্ডল। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও ৪৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে তাদের শিল্পকর্মের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।
পরে উপাচার্য শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং ফিতা কেটে এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরে তিনি প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো ঘুরে দেখেন। এসময় চারুকলা স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা ৬টায় চারুকলা প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রদর্শনী আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের প্রদর্শনীতে ২৪০ জন শিক্ষার্থীর ৩ শতাধিক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত।


সর্বশেষ সংবাদ