পোষ্য কোটা

১০০-তে ৩০ নম্বর পেয়েই ইবিতে ভর্তি হয়েছেন ২০ শিক্ষার্থী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছের অধীনে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পোষ্য কোটায় ন্যূনতম ৩০ নম্বর পেয়ে শর্ত পূরণ করে ২০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। পোষ্য কোটায় ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে গুচ্ছের নিয়মের বাইরে গিয়ে এমন ভর্তি কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন গুচ্ছ সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, ‘ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি’র ব্যানারে পোষ্য কোটায় সন্তানদের ভর্তির শর্ত শিথিল করে আবেদনের যোগ্যতা থাকলেই ভর্তির দাবিসহ ১৬ দফা দাবিতে অন্তত দুই মাস কর্মবিরতি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটি অংশ। পরে আইনগতভাবে বৈধ সব দাবি মেনে নেয়া হবে, এমন প্রতিশ্রুতিতে কর্মবিরতি স্থগিত করেন তারা।

ইবিতে কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত ১৫ অক্টোবর গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) গুচ্ছের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে ধার্যকৃত ন্যূনতম নম্বর ৩০-এর পরিবর্তে ২০ নম্বর প্রাপ্তদের ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরে বশেমুরবিপ্রবিতে পোষ্য কোটায় ভর্তির শর্ত শিথিলের রেফারেন্স দিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির নেতারা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন: ১০০-তে ২০ নম্বর পেলেও ভর্তি হওয়া যাবে বশেমুরবিপ্রবিতে

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসান বলেন, ‘পোষ্য কোটায় ৩০ নম্বরের পরিবর্তে শর্ত শিথিল করে ২০ নম্বর করে ভর্তির আবেদন জানিয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। হার্ড কপিও পাঠানো হবে।’

তবে গুচ্ছের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময় ও নির্দিষ্ট নিয়মের বাইরে গিয়ে পোষ্য কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানোকে নিয়ম-বহির্ভূত ও অনৈতিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউজিসি ও গুচ্ছ সংশ্লিষ্টরা।

গুচ্ছের টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময় কিংবা নম্বরের বাইরে ভর্তি নেয়ার নিয়ম নেই, তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি এ ক্ষেত্রে ভর্তি গ্রহণ করে, তবে তা হবে নিয়মবহির্ভূত। গুচ্ছ সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্তই গুচ্ছ কমিটির সভায় নেয়া হয়।’

ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, আবেদনের যোগ্যতা থাকলেই ভর্তি, পৃথিবীর কোথাও এমন নিয়ম নেই। কোটায় নম্বর কমিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। গুচ্ছ কেন্দ্রীয় কমিটি যে নম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেটাই চূড়ান্ত। গুচ্ছের বাইরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারে না। কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়ার জন্য ভর্তির ন্যূনতম নম্বর কমানো সম্পূর্ণ অনৈতিক।

তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, আমার জানা মতে, গুচ্ছ কমিটি শুধু পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা দেবে, ভর্তির সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের। কে বা কাদের কী যোগ্যতায় ভর্তি করানো হবে, তা সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারে। তারা চাইলেই কোটার যোগ্যতা শিথিল করে ভর্তি নিতে পারে। গুচ্ছ ভর্তির সময় শেষ হলেও ভর্তি কমিটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার অধিকার রাখে।


সর্বশেষ সংবাদ