দু’বার ভাইভা ফেরত, ৩য় চেষ্টায় সহকারী জজ ইবির মারিয়া

মারিয়া সুলতানা
মারিয়া সুলতানা  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে মারিয়া সুলতানা। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সারাদেশে মোট ১০৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি দু’ইবার ভাইভা ফেরত আসলেও হতাশ হয়নি।

ফলে তৃতীয়বারের চেষ্টায় কাঙ্ক্ষিত সফলতা পেয়েছেন। এখন অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার নাম মারিয়া। সম্প্রতি তিনি তার সাফল্য ও শিক্ষা জীবন নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছেন। তার কথাগুলো শুনেছেন মো. রাকিব হোসেন

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে অভিনন্দন। আপনার জন্ম, শৈশবকাল সম্পর্কে জানতে চাই। আপনার সাফল্যে আপনার পিতামাতার অবদান সম্পর্কে বলুন।
মারিয়া সুলতানা: আমার জন্ম নড়াইল জেলাতে। গ্রামেই শৈশবকাল কেটেছে। এলাকার স্কুল-কলেজেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছি। আমার এই জার্নিতে আলহামদুলিল্লাহ আমার আব্বু-আম্মু, ভাইয়ার অবদান সব থেকে বেশি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সত্যিই কি বিচারক হতে চেয়েছিলেন? এ স্বপ্নের যাত্রাটা শুরু কীভাবে? 
মারিয়া সুলতানা: না। স্বপ্ন ছিলো ইংরেজি শিক্ষক হওয়ার। আব্বুর পরামর্শে আইনে ভর্তি হওয়ার পরে সিনিয়রদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে?
মারিয়া সুলতানা: আব্বু-আম্মুর আমাকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। হোঁচট খেলেও তাদের আশা আমাকে উঠে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে। তাছাড়া বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, সিনিয়র ভাইয়া-আপুদের দিকনির্দেশনা, পরামর্শগুলো অনেক বেশি কাজে লেগেছে।

আরও পড়ুন: সহকারী জজ হলেন স্টেট ইউনিভার্সিটির সাথী-বিল্লাল

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কত ঘণ্টা করে পড়ালেখা করেছেন, কীভাবে পড়াশোনা করেছেন?
মারিয়া সুলতানা: নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না কত ঘণ্টা করে পড়েছি প্রতিদিন। তবে জুডিশিয়ারি সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিদিন কি কি সাবজেক্ট এবং কোথা থেকে পড়বো তা আগে সিলেক্ট করে নিতাম।প্রয়োজনে নোট করতাম, যেন বিষয়গুলো এক জায়গায় গোছানো থাকে। বারবার খুঁজে বের করা না লাগে। এটা খুবই কাজে লেগেছে আমার। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরের অনুভূতিটা জানতে চাই।
মারিয়া সুলতানা: মহান আল্লাহ তা’আলার অশেষ রহমতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কয়বার ভাইভা দিয়েছেন এবং কততম ভাইভাতে সফল হয়েছেন?
মারিয়া সুলতানা: ৩টা ভাইভা দিয়েছি। তৃতীয়বারে আল্লাহ তা’আলা রহমত করেছেন। 

দ্যা ডইলি ক্যাম্পাস: যারা বিচারক হতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
মারিয়া সুলতানা: তাদের উদ্দেশ্যে বলবো এই কঠিন সময়টাতে একটু অসামাজিক হতে। নিজের জন্য, নিজেকে সময় দিতে, নিজেকে বিজেএস পরীক্ষার জন্য গুছিয়ে নিতে। আসলে পড়ার বিকল্প নেই। পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল হতে হবে। স্রষ্টার সাথে সখ্যতা বাড়ানোর জন্য বলবো, তিনিই উত্তম পরিকল্পনাকারী ও রিজিকের মালিক।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হয়ে কি অবদান রাখতে চান?
মারিয়া সুলতানা: বিচারালয় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। বিচারের মাধ্যমে মানুষের অধিকার আদায় ও সমাজ সংস্কারে কাজ করতে চাই। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা আমাকে ন্যায়ের সাথে আইনের কালো অক্ষরে সীমাবদ্ধ থাকা ও বিনয়ী হওয়ার তৌফিক দান করুন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ।
মারিয়া সুলতানা: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের জন্যেও শুভকামনা।


সর্বশেষ সংবাদ