অন-ক্যাম্পাস

ইউজিসির প্রতিক্রিয়ার আবারও পাল্টা জবাব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি  © টিডিসি ফটো

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক চালু করা নিয়ে আবারও একে অপরকে পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। 

নিয়ম মেনেই মূল ক্যাম্পাসে অনার্স চালু হচ্ছে বলে আইন উল্লেখ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাব দেয়ার বিষয়ে গত ৩ অক্টোবর এসকল কার্যকম এখতিয়ার অবমাননার শামিল বলে এক স্মারক পত্রে জানিয়েছে ইউজিসি। স্মারক পত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আবারো সংশ্লিষ্ট আইন স্মরণ করিয়ে দিয়ে ইউজিসি জানায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্ষমতা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং ইউজিসির আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হবে। 

পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সংবিধির অনুচ্ছেদ-৭ অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলকে শুধুমাত্র অধিভুক্ত কলেজসমূহের ব্যাপারে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে তাই গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রাম পরিচালনার বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সংবিধির পরিপন্থী।

তবে  ইউজিসির স্মারক পত্রে উল্লেখিত কমিশনের এখতিয়ার অবমাননার বিষয়টি নাকচ করে আবারও পাল্টা জবাব দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক স্মারক পত্রে এই পাল্টা জবাব দেয়া হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইউজিসিকে দেয়া পাল্টা জবাবে বলা হয়, আপনাদের পত্রে উল্লেখিত কমিশনের এখতিয়ার অবমাননার বিষয়টি যথাযথ নয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ ১৯৭৩ এর ৫নং অনুচ্ছেদে কমিশনের এখতিয়ার সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এখতিয়ার সমূহের কোথাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অন-ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রামে পাঠদান ও ভর্তি বিষয়ে হস্তক্ষেপ বা বিধি-নিষেধ আরোপ করার কোন এখতিয়ার কমিশনকে প্রদান করা হয়নি। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২ এর ৩ নং ধারা আবারো স্মরণ করিয়ে দিয়ে জবাব পত্রে আরও বলা হয়, ধারা ৩ অনুযায়ী বলবৎ অন্য কোন আইনে বিপরীত যায় কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর হবে। সুতরাং এর আইনগত প্রাধান্য অবশ্যই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ ১৯৭৩ এর উপর অগ্রগণ্য হবে। 

সংবিধির ৭ নং অনুচ্ছেদে স্নাতকপূর্ব বিষয়ে বা প্রোগ্রামে অন-ক্যাম্পাস পাঠদান ও ভর্তি সংক্রান্ত কোন বিধি-নিষেধ নেই বরং একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শিক্ষা সংগঠন ও অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনের কথা বলা হয়েছে যা বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে বলেও জানানো হয় ওই পত্রে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই পত্রে কমিশন এর এখতিয়ার মূলত মূল্যায়ন, পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানের যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আদেশ ১৯৭৩ দ্বারা সীমাবদ্ধ স্পষ্টত স্মরণ করিয়ে বলা হয়, যেহেতু কমিশন কর্তৃক চলমান ইস্যুতে কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করার এখতিয়ার আইনত নেই সেহেতু এখতিয়ার বর্হিভূত নির্দেশনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর উপর প্রযোজ্য নয়। 

সর্বশেষ ব্যাখ্যার আলোকে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে বলে গণ্য হবে উল্লেখ করে এউজিসির সাথে একটি যৌথসভার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় ওই জবাব পত্রে।

এর আগে, ২১ জুলাই প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি, বিবিএ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স এই চারটি বিষয়ে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন আহ্বান করার মাধ্যমে অন-ক্যাম্পাস অনার্স চালুর কার্যক্রম ‍শুরু করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় আইন না মেনে এবং ইউজিসির অনুমতি না নিয়েই এই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এছাড়া আইন বিভাগ চালু করতে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বার কাউন্সিলের ছাড়পত্র নেয়া হয়নি বলেও জানায় ইউজিসি। 

এর প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিলো, অন-ক্যাম্পাস অনার্স চালু করতে ইউজিসির অনুমতির প্রয়োজন নেয় এবং আইন বিভাগে ভর্তি নিতে বার কাউন্সিল থেকেও লাগবে না ছাড়পত্র। 


সর্বশেষ সংবাদ