খাদিজার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জবিতে সমাবেশ, উপাচার্যকে স্মারকলিপি

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন এক শিক্ষার্থী
সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন এক শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক অসুস্থজনিত ছুটিতে থাকায় কোষাধ্যক্ষ ও উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে 'খাদিজার মুক্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়' ব্যানারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিনা বিচারে এক বছরের বেশি সময় ধরে আটক রাখা হয়েছে খাদিজাকে। খাদিজার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধা দিয়ে তাদের ন্যক্কারজনক আচরণ প্রদর্শন করেছে। তার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রণ প্রমাণ করে, খাদিজার প্রতি জুলুম করা হচ্ছে। আমাদের একটাই কথা, খাদিজাকে মুক্তি দিতে হবে এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। 

স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা দীর্ঘ ৩৮২ দিন ধরে বিনা বিচারে কারাগারে আটক। ২০২০ সালে হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ নামক একটি অনলাইন টকশো সঞ্চালনা করেন খাদিজা। সেখানে তিনি দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক অবক্ষয় সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এটাই ছিল তার অপরাধ। সেই টকশোকে কেন্দ্র করে খাদিজার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানার দুজন অফিসার। সেসময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। অর্থাৎ অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি আজ কারাগারে। এরই মধ্যে তিন বার তার মামলার শুনানি পেছানো হয়।

আরও বলা হয়, খাদিজার সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। যে আইনে খাদিজা আজ কারাবন্দী সেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যে কতটা নিবর্তনমূলক তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি যখন তীব্র সমালোচনার মুখে এর নাম পরিবর্তন করতে সরকার বাধ্য হয়। দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক অঙ্গণের লেখক শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীরা এ সময়ে খাদিজার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইতিমধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীও খাদিজার মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছে। খাদিজাতুল কুবরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে অবিলম্বে খাদিজাতুল কুবরার নিঃশর্ত মুক্তির জন্যে যথাযথ ভূমিকা রাখার দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, খাদিজার মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গত ২৯ আগস্ট মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে গত ৩১ আগস্ট থেকে খাদিজার মুক্তির দাবির পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়।


সর্বশেষ সংবাদ