ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস গাছ রোপণ বন্ধের দাবিতে বেরোবিতে মানববন্ধন

মানবন্ধনে বেলা ও রিভারাইন পিপলের সদস্যরা
মানবন্ধনে বেলা ও রিভারাইন পিপলের সদস্যরা  © টিডিসি ফটো

প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস গাছ উৎপাদন, বিপণন ও রোপণ বন্ধের দাবিতে মানবন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও বেরোবি রিভারাইন পিপল ক্লাব। বুধবার (২১ জুন) বেলা সাড়ে ১১ টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেটের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রিভারাইন পিপলের পরিচালক  ড. তুহিন ওয়াদুদ। সঞ্চালনা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন পিপল ক্লাবের সদস্য সচিব শিহাব প্রধান।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর রাজশাহী কার্যালয় সমন্বয়কারী তন্ময় সান্যাল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন পিপল ক্লাবের আহবায়ক ছাওমুন পাটোয়ারী সুপ্ত, কারমাইকেল কলেজ রিভারাইন পিপুলের আহবায়ক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ প্রমুখ।

রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, আমাদের দেশেও ইউক্যালিপটাসের বনায়নের ফলে সরাসরি বেশ কিছু প্রভাব পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের উপর পরিলক্ষিত হয়। যেমন- মাটি, পানি, জলবায়ু পরিবেশ ও প্রতিবেশ, মানব স্বাস্থ্য, পশুপাখি ও কীটপতঙ্গেও উপর প্রভাব। এসব বিদেশী গাছ আমাদের দেশীয় প্রজাতি ধ্বংসের পাশাপাশি মাটির উর্বরতা নষ্ট, প্রাণির অভয়াশ্রম নষ্ট, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের ক্রমাবনতি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয় ইত্যাদির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর রাজশাহী কার্যালয় সমন্বয়কারী তন্ময় সান্যাল বলেন, দ্রুত বর্ধনশীল এবং অভিযোজন ক্ষমতার কারণে ইউক্যালিপটাস অনেক দেশেই কাঠের গাছ হিসাবে জনপ্রিয়তা পেলেও এর রয়েছে নানা অভিযোগ ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া। এই গাছে অধিক পরিমাণে তেল থাকায় এটা বেশ দাহা এবং এর আবাসভূমি অস্ট্রেলিয়াতে একে অগ্নি সৃষ্টিকারী হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়। তাই সেখানে আবাসিক এলাকায় এবং ঘরবাড়ির কাছে এই গাছ কম লাগানো হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইউক্যালিপটাসের ক্ষতিকর প্রভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় সেখানকার কৃষিজমি, নদীর ধার ও নদী অববাহিকা ইত্যাদি স্থানে এ ধরনের বৃক্ষ রোপন নিষিদ্ধ করা হয়। 

কারমাইকেল কলেজ রিভারাইন পিপুলের আহবায়ক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ বলেন,
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও পঞ্চগড়ের মহাসড়ক এবং সামাজিক বনায়ন কর্মসূচিতে একটু নজর দিলেই তার প্রমান মিলবে। এই অঞ্চলের জেলাগুলোতে ইউক্যালিপটাস গাছের সংখ্যা কত এবং এই গাছের প্রভাবে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা বা কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তার কোনো পরিসংখ্যাণ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার তথ্য বনবিভাগ বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে নেই। দেশে সবচেয়ে বেশি ইউক্যালিপটাস চোখে পড়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে।

তিনি আরও বলেন, নানা বির্তকের প্রেক্ষিতে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ২০০২ সালে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো বন্ধের পদক্ষেপ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাতিল হয়ে যায়। তবে ইউক্যালিপটাসের ক্ষতিকর দিকের কথা বিবেচনা করে বন অধিদপ্তরের সুপারিশ অনুযায়ী, একটি বনের ১০% এর বেশি এই গাছ লাগানো যাবে না বলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ