সেহেরিতে গরুর মাংস না থাকায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩০ PM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০:০৫ PM
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া থেকে সেহেরির জন্য রান্না করা গরু মাংস সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার জুমার পর জয়বাংলা মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনায় দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তোলেন।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পবিত্র রমজানের প্রথম সেহেরির খাবারের মেন্যুতে রাখা হয় গরুর মাংস। রান্নাও করেন ক্যাফের বাবুর্চি। কিন্তু সে মাংস শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশন করার আগেই ক্যাফে পরিচালনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের নির্দেশে সরিয়ে নিতে হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আজ জুমার নামাজের পর জয়বাংলা মোড়ে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ক্যাফেটেরিয়া ও ডাইনিংয়ে সেহেরিতে গরুর মাংস রান্না করতে হবে এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাও করতে হবে। যে কবি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়েছেন, সেই কবির নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক চর্চা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা চর্চা লালন করবে তাদের আমরা রুখে দিতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ধর্ম নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি চলবে না। যে যে ধর্মের, তারা যার যার মতো করে রীতি মেনে তাদের ধর্ম পালন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো রকম ধর্মীয় গোঁড়ামি চলবে না। সব ডাইনিং এবং ক্যাফেটেরিয়াতে গরুর মাংসসহ সব ধরনের খাবার রাখতে হবে। অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। আমি ক্যাফেটেরিয়ার ম্যানেজারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রমজানে ভালোমন্দ খাওয়া খুবই জরুরি। গরুর মাংস পরিবেশন করতে না দেওয়াটা দুঃখজনক।
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফ উদ্দিন বলেন, কমিটি সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে একই সঙ্গে সেহেরিতে গরুর মাংস রান্না এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে পারত।
ক্যাফেটেরিয়ার ম্যানেজার ফরহাদ বলেন, গত ৫ বছর ধরে ক্যাফেতে গরুর মাংস রান্না করা হয় না। রমজান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনুরোধে সেহেরিতে গরুর মাংস রান্না করেছি। কিন্তু খাবার পরিবেশন করার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল শিক্ষকদের নির্দেশে মাংস সরিয়ে নেওয়া হয়। এ মাংস বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। রান্না করা মাংস বিক্রি করতে না পারায় ৫ হাজার টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার।
এদিকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ‘চক্রবাক’ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সংবাদ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনায় কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো ক্যাফেটেরিয়ায় গো-মাংস পরিবেশনযোগ্য। এ সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের কোনো বিধিনিষেধ ছিল না বা নেই। উপাচার্যের নির্দেশক্রমে এই পত্রের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ‘চক্রবাক’ পরিচালনা কমিটি বাতিল করা হলো।