দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কারের পেছনে র্যাগিং আর সংঘর্ষ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৩:১২ PM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৯ PM
র্যাগিং এবং সংঘর্ষের জেরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ১৮ জন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ জন সহ মোট ২৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শাবিপ্রবির ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৭তম সিন্ডিকেট সভায় গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বহিষ্কার কেরা হয়েছে। এদের মধ্যে র্যাগিংয়ের অভিযোগে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন: এবার জাবি ছাত্রলীগের তিন নেতাকে অব্যাহতি
এছাড়া, যৌন হয়রানির অভিযোগে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের তাসফিকুল হক নামের এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী জীবন চন্দ্র সেনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এসময় তিনি আরো জানান, ১৮ জন ছাড়াও পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সাভারের এক রেস্টুরেন্টে বসা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের মধ্যকার এই মারপিটের ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ হলের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। আহত সাইফুলকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: সেই ছাত্রলীগ নেতার পক্ষে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষ
পরবর্তীতে বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসজুড়ে দেশি অস্ত্রের মহড়ায় নামে রবীন্দ্রনাথ হলের ছাত্রলীগকর্মীরা। অবশেষে রাত সাড়ে ১১টায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভা থেকে।
বহিষ্কৃতরা হলেন- আইন ও বিচার বিভাগের ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের কাইয়ূম হাসান ও আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভিরুল ইসলাম। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।
এদের মধ্যে অমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, গালিব ও কাইয়ূম সহসম্পাদক, আরিফুল ইসলাম কার্যকরী সদস্য এবং তানভিরুল কর্মী বলে পরিচিত।
আরো পড়ুন: হলের সামনে গিয়ে ছাত্রীদের নাম ধরে ছাত্রলীগ নেতার চিৎকার-চেঁচামেচি
এছাড়া, মারধরের ঘটনার পাশাপাশি গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেশি অস্ত্র প্রদর্শন, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
১৯ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেকের নেতৃত্বে কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম এবং সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।
কমিটি রবিবার (১৯ মার্চ) সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দুটি মারধরের ঘটনারও তদন্ত করবে।