‘ফুলপরীকে র্যাগ দিবি, যা ইচ্ছে তাই করবি’
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১৬ AM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৩৮ AM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের এক নবীন ছাত্রীক বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতনে ঘটনা ঘটনায় তোলপাড় সারা দেশ। এ র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের ঘটনার মূল হোতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ছিল বলে অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিযুক্ত বলেন, ‘গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা আপু আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে বলে প্রত্যেকে এক ঘণ্টা করে ফুলপরীকে রুমে ডেকে র্যাগ দিবি। যা ইচ্ছা তাই করবি। যত কিছু হবে সব আমি দেখবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উনাকে বলি এগুলো করা তো ঠিক হবে না আপু। পরে উনি আমাদেরকে বড় বড় চোখ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে তিনি বলেন, যা বলছি তাই কর। দরকার হলে ফুলপরীকে মেরে ফেলবি, আমি লাশ গুম করে দেব। এরপর কিছু হলে আমি একাই দেখব, তোদের কিছু ভাবতে হবে না।’
অভিযুক্তরা আরও জানান, ‘ঘটনার পর অন্তরা আপু আমাদের বলেন বাইরের কাউকে কিছু জানাবি না। পরে উনি জোরপূর্বক আমাদের মোবাইল থেকে কল লিস্ট ও মেসেজ সব ডিলিট করে দেন।’
এদিকে তদন্ত কমিটির কাছে স্বাক্ষাৎকারে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত অন্য সহযোগীদের অন্তরা বলেছিলেন, ‘আগে আমি বাঁচি, পরে তোদেরকে বাঁচাবো।’ প্রতিবেদকের কাছে অভিযুক্তদের ওপরের দেয়া সাক্ষাৎকার প্রমাণ সংরক্ষিত আছে। তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও অন্তরার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি রোববার তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পরে নির্দেশনা মোতাবেক সেই প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। ভিসি মহোদয় ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। ঢাকা থেকে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে রোববার ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১ মার্চ বেলা ১২টার মধ্যে তাদেরকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। অন্তরা বাদে সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।