প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে বিলম্ব, পারিশ্রমিক ছাড়াই কাজ করছেন নার্সরা

প্রতীকী
প্রতীকী  © ফাইল ছবি

রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষানবিশ নার্সরা। বর্তমানে ১১টি বেসরকারি নার্সিং কলেজের আড়াইশ শিক্ষানবিশ নার্সকে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করানো হচ্ছে। শিক্ষানবিশকালে তাদের পারিশ্রমিকের বিষয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় তাদের অবস্থা। উল্টো অভিযোগ উঠেছে, ইন্টার্নশিপের জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

জানা গেছে, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের (বিএনএমসি) পরিচালনায় দেশে বর্তমানে তিন কোর্সে নার্সিং শিক্ষা চলমান রয়েছে। নার্সিংয়ের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে চার বছর মেয়াদি বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সকে অনার্স সমমানে উন্নীত করেছে সরকার। নিয়ম অনুযায়ী ইন্টার্নশিপের সময় শিক্ষানবিশ নার্সরা মাসিক সাত হাজার করে ৬ মাসে ৪২ হাজার টাকা পাবেন। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। 

শিক্ষানবিশ নার্সরা জানান, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ১৪টি নার্সিং কলেজের সবশেষ পাশকৃত ২০১৭-১৮ সেশনের বিএসসি কোর্সের ৫০৯ জন শিক্ষার্থী ইন্টার্ন করছেন। এর মধ্যে ৩টি সরকারি নার্সিং কলেজের ২৬৪ জন শিক্ষার্থী নামমাত্র ইন্টার্নশিপ ভাতা পেলেও বঞ্চিত ১১টি বেসরকারি নার্সিং কলেজের প্রায় আড়াইশ শিক্ষানবিশ নার্স। চরম নিগ্রহের শিকার হয়ে উলটো বিভিন্ন শাস্তির মুখে পড়তে হয় তাদের।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ১৮ এপ্রিল উপসচিব ফারজানা সুলতানা স্বাক্ষরিত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘শিক্ষানবিশকালে শিক্ষানবিশ শ্রমিক মাসিক সর্বসাকুল্যে ৭ হাজার টাকা প্রাপ্ত হইবে। এই প্রজ্ঞাপন ২৮ নভেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দে কার্যকর হইয়াছে বলে গণ্য হইবে।’ তবে ৬ মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি এ প্রজ্ঞাপন।

আরও পড়ুন: প্রেগনেন্সি মানে গর্ব, মেয়েদের সৌন্দর্য আর শক্তি: পিয়া জান্নাতুল

সূত্র জানিয়েছে, অধ্যয়নকালীন বেসরকারি নার্সিং কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফিসহ নামে-বেনামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও ইন্টার্নশিপের ব্যাপারে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। নিজস্ব হাসপাতালই নেই বেশিরভাগ কলেজের। মিথ্যা আশ্বাসে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে প্রতারণা করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। রাজশাহীতে শুধুমাত্র ইসলামী, বারিন্দ, এম রহমান ও ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন নার্সিং কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, এ তিনটি প্রতিষ্ঠানও সম্মানি দেয় না শিক্ষানবিশ নার্সদের। ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ঢাকায় ইন্টার্ন করলে নামমাত্র কিছু সম্মানি দেয়। কিন্তু রাজশাহীতে কোনো সম্মানি দেয় না তারা। অথচ একই জায়গায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা প্রতি মাসে সম্মানি পান ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর সিনিয়র স্টাফ নার্সরা মাসিক বেতন পান প্রায় ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।

বেসরকারি নার্সিং শিক্ষার্থীদের সংগঠন এসবিজিএসএনর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান আকাশ বলেন, সব ক্ষেত্রে আমরা বঞ্চিত। আমাদের দেখার কেউ নেই। আমিও টাকা দিয়ে সিরাজগঞ্জ মেডিকেলে ইন্টার্ন করছি। অথচ নিয়মানুযায়ী আমার ৪২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। সমপরিমাণ ডিউটি করেও আমরা বৈষম্যের শিকার।

ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন নার্সিং কলেজের বিএসসি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলভি হাসান অনিক বলেন, প্রাইভেট কলেজের স্টুডেন্টদের টাকা দেয় না, উলটো ৬ মাসের একটা অ্যামাউন্ট নেয়। এটা রীতিমতো আমাদের প্রতি অন্যায়।

ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রাজশাহীর অধ্যক্ষ এবং পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানাউল হক মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নেব। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার (উপসচিব) রশিদুল মান্নাফ কবীর বলেন, শিক্ষানবিশ নার্সরা তাদের পারিশ্রমিকের টাকা পাচ্ছেন না, এটা জানা নেই। নার্সরা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence