পরিবেশ আইন নিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে জাতীয় সম্মেলন

দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন
দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন  © সংগৃহীত

পরিবেশ রক্ষায় আইনি উদ্যোগ বাস্তবায়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করেছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। শুক্রবার (২২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ আয়োজিত ‘এনভায়রনমেন্টাল ল অ্যান্ড পলিসি’ শীর্ষক এ সম্মেলনের প্রথম দিনে পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।

তারা বলেন, মানবজাতিকে সুস্থভাবে পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখতে হলে দূষণমুক্ত পরিবেশের বিকল্প নেই। নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এটা থেকে উদ্ধারে সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায়ের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।

এছাড়া এতে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাকিয়া আফরোজ এবং সম্মেলনের আহ্বায়ক ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক অধ্যাপক ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, স্রষ্টার সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার আগে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। এ রক্ষার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, প্রত্যেকটি মানুষের। সত্যিকার অর্থে বাঁচার মত বাঁচতে চাইলে নিজ নিজ জায়গা থেকে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

উপমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব আজ ঘরে এসি লাগিয়েও গরমে টিকতে পারছে না। আমরা যেন সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি না হই। নিজের ঘর ও সমাজ ঠিক রাখলে একসময় গোটা দেশটাও পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠবে।

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ শুধু দেশীয় না, বৈশ্বিকভাবেও পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে। আর এই দূষণে সবচেয়ে বেশি দায়ী হলো যুক্তরাষ্ট্র। আগামীতে কেন যুক্তরাষ্ট্রকে আইনের আওতায় আনা যাবে না- আইনের শিক্ষার্থীদেরকে তা নিয়েও ভাবতে হবে।

আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, আইন প্রণয়নের আগেই আমাদের হাতের মুঠোয় প্রযুক্তি চলে আসছে। এর ফলে একদিকে যেমন আইন প্রয়োগ হয় না, অন্যদিকে প্রযুক্তির অপব্যবহার হয়। পরিবেশ আইন যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ার জন্যও এই বিষয়টি দায়ী।

তিনি বলেন, পরিবেশ কীভাবে দূষণ হয় তা একজন শিশুর সামাজিকীকরণের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। কারণ কোথায় সে আবর্জনা ফেলবে, কীভাবে তার আশেপাশের পরিবেশ রক্ষা করবে- সেটা পরিবারই তাকে শিক্ষা দেবে। যদিও আমাদের অধিকাংশ পরিবার তা শিক্ষা দেয় না।

সম্মেলনের সেশন চেয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, পরিবেশ রক্ষায় মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের মাধ্যমে এই সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কলকারখানা নির্মাণ, নগরায়ণসহ নানা কারণে আমাদের পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যদিও বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বেশ কিছু আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ায় এই দূষণ কমে এসেছে।

অনুষ্ঠানে আইন অনুষদের ডিন ও সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব দুই দিনব্যাপী এ কনফারেন্সের নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের কী করতে হবে, কী আইন প্রয়োজন।

এছাড়া সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ের উত্থাপিত গবেষণা প্রবন্ধের মাধ্যমে পরিবেশ আইন ও পলিসি সংক্রান্ত নানামুখী প্রস্তাবনা উঠে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ