এনএসইউ-সিএমএস গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশে শ্রমিক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৬ PM , আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ PM

শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে ‘বাংলাদেশে শ্রম অধিকার: চ্যালেঞ্জ, সংস্কার ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ)। আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস ২০২৫ উদযাপনের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এই আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)-এর সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ (সিএমএস)।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মাননীয় উপদেষ্টা, শ্রম ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বলেন, মালিকদের শ্রমিকের প্রতি দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারকে একা সবকিছু সামলাতে পারে না। তিনি শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে মালিকদের জবাবদিহিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং একাডেমিয়ার সরাসরি সম্পৃক্ততার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়, যা শ্রম সংক্রান্ত গবেষণা ও নীতিমালার উন্নয়নে যৌথ সহযোগিতার অঙ্গীকার প্রকাশ করে। ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা, সহকারী অধ্যাপক, পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড সোসিওলজি বিভাগ, এনএসইউ, তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বৈশ্বিকভাবে শ্রমিকদের ওপর যেভাবে কর আরোপ করা হচ্ছে, তাতে শ্রম অধিকার রক্ষায় আমাদের নীতি আরও দৃঢ় হওয়া জরুরি।
প্রফেসর ড. মো. রিজওয়ানুল ইসলাম, ডিন, স্কুল অফ হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস, এনএসইউ, শ্রম সংস্কার কমিশনের অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেন এবং বলেন, পরামর্শমূলক সুপারিশের পাশাপাশি বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।
ড. সেলিম রেজা, সমন্বয়ক, সিএমএস ও সহযোগী অধ্যাপক, উল্লেখ করেন, কমিশনের প্রতিবেদন ৮ কোটি শ্রমিকের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তিনি জাতীয় মজুরি কমিশন গঠন, শ্রমিক ডেটাবেস তৈরি, এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের কথা তুলে ধরেন। মি. নাফিজ আহমেদ, প্রভাষক, আইন বিভাগ, বলেন, "মূল্যবোধের বিবৃতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও, কার্যকর শ্রমিক সুরক্ষার জন্য সুস্পষ্ট আইনি কাঠামো থাকা অপরিহার্য।
এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এনএসইউর বিশ্লেষণকে স্বাগত জানান এবং বলেন, পলিসি মেকার ও একাডেমিয়ার মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনাই এখন সময়ের দাবি।
তিনি রানাপ্লাজা দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন। নিারান রামজুথান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, আইএলও বাংলাদেশ, বলেন, যুব বেকারত্ব ও অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক সুরক্ষা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ, প্রধান, শ্রম সংস্কার কমিশন, বলেন, এই প্রতিবেদন নিখুঁত না হলেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা। তিনি ধারাবাহিক আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, প্রফেসর ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, সমাপনী বক্তব্যে বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যাল্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক শ্রমিকদের অধিকার উন্নয়নের জন্য এক শক্তিশালী অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, শ্রম আইনকে আরও ভালোভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।