বিয়ে অনেকের কাছেই ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’! এবার এই চিরস্থায়ীত্বের মেয়াদ কত, কি তার শর্ত তা তো আগে থেকে ঠিক করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই ভারতের আসামের এক নবদম্পতি এই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের নিয়ম কানুন, শর্ত, শর্তখেলাপ সব কিছু আগে থেকে লিপিবদ্ধ করে তবে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন। বিয়ের দিন একটি অদ্ভুত চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেন বর কনে। আসামের গুয়াহাটির পল্টন বাজারের বছর চব্বিশের কনে শান্তি প্রসাদ, মিন্টু রাইয়ের সঙ্গে বিবাহের প্রতিশ্রুতিতে বদ্ধ হন এবং এর পরেই পাত্রকে চুক্তিপত্রে সই করতে বলেন।
চুক্তিটি মূলত দম্পতিদের মধ্যে বিয়ের পরের নানা সমস্যা ঝগড়াকে কমিয়ে আনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। বিয়ের আগে নানা উত্তেজনা থাকলেও প্রায়ই বিয়ের দিনে এই বিষয় উপেক্ষা করে যান অনেকেই। এই অদ্ভুত চুক্তির মধ্যে রয়েছে, মাসে একটি পিৎজা খাওয়ার অনুমতি, সবসময় ‘বাড়ির খাবার’-এ হ্যাঁ বলা, প্রতিদিন অবশ্যই শাড়ি পরা, গভীর রাতে পার্টির ‘অনুমতি’ কিন্তু “শুধু আমার সঙ্গে”, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, রবিবার সকালের প্রাতঃরাশ, প্রতিটি পার্টিতে ভাল ছবি তোলা এবং প্রতি ১৫ দিন অন্তর কেনাকাটা করা।
এ বিষয়ে পাত্রী শান্তি বলেন, “বন্ধুরা বিয়ের উপহার হিসাবে এই চুক্তিটি নিয়ে এসেছিল। ওরা বলেছিল সারপ্রাইজ, কিন্তু আমরা মোটেও টের পাইনি কী সেই সারপ্রাইজ। আমরা দু’জনেই তাতে সই করেছি। আমি পিৎজা পছন্দ করি কিন্তু যেহেতু আমি ডায়েটে রয়েছি, তাই মাসে একটি পিৎজা। একইভাবে, ও প্রতিদিন জিমে যাবে। আমি রবিবার সকালের প্রাতঃরাশ পছন্দ করি; পুরি সবজি বা কিছু মশলাদার তরকারি পছন্দ করি সেদিন। সপ্তাহে একবার মিন্টু রান্না করবে। শাড়িতে একটু সমস্যা ছিল কিন্তু ও বাকি পয়েন্টে একমত ছিল তাই এতে আমিও রাজি হয়ে গেছি।’’
স্নাতকের পড়াশোনা শেষ করে একটি কোচিং সেন্টারে কাজ করেন শান্তি। এখন অন্তত কয়েক বছর নিজের নতুন বাড়ি এবং পরিবারের যত্ন নিয়েই দিন কাটাবেন। “আমাদের পরিবারও এই চুক্তিতে খুব খুশি,” বলে জানান তিনি।
গত ২১ জুন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরদিন চুক্তির এই ভিডিও চিত্র ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়। অভিনব চুক্তিতে নবদম্পতির সই করার ১৬ সেকেন্ডের ভিডিও চিত্র অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই সাড়া ফেলে। এর পর থেকে সাড়ে চার কোটি মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন, মন্তব্য করেছেন অনেকেই।