পড়াশোনা চালাতে কোটি টাকা ঋণ, ডিম্বাণু বেচে শোধ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর

দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ চালাতে ধার নিয়ে তা ফেরত দিতে সমস্যায় পড়েন অনেকেই
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ চালাতে ধার নিয়ে তা ফেরত দিতে সমস্যায় পড়েন অনেকেই  © প্রতীকী ছবি

যুক্তরাজ্যের নিউইয়র্কে ক্যাসান্ড্রা জোনস নামের এক তরুণীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ চালাতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার ধার করতে হয়েছিল। বাংলাদেশি মুদ্রার হিসাবে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পড়াশোনা শেষে চাকরিও পাননি। ফলে নিজের ডিম্বাণু বিক্রি করে ধার শোধ করতে হচ্ছে এই তরুণীকে।

ক্যাসান্ড্রা জোনস একা নন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ চালাতে ধার নিয়ে তা ফেরত দিতে সমস্যায় পড়েন তার মতো অনেকেই। আর সেই ধার শোধ করতে গিয়ে অনেকেরই নাভিশ্বাস ওঠে।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য এমন সমস্যায় পড়েন ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা, সেই তালিকায় একেবারে ওপরের দিকেই আছে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ যেমন বেশি, তেমনই পড়া চলাকালীন অর্থ সঙ্কটে পড়লে তার প্রমাণ দেখিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ সাহায্য পাওয়া যায় না।

এতদিন এই বিষয়গুলো নিয়ে টুকটাক আলোচনা চললেও কাসান্ড্রার ঘটনাটি সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে পড়াশোনার খরচ চালাতে কী অবস্থা হচ্ছে অনেকের। দেখিয়ে দিয়েছে, পড়াশোনা এখন রীতিমতো বিলাসিতার জিনিস।

ক্যাসান্ড্রা জোনস জানান, ধার শোধ করতে ইতিমধ্যেই ৫ বার নিজের ডিম্বাণু বিক্রি করেছেন তিনি। তাতে তার মোট আয় হয়েছে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এখনও বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ডলার। 

এভাবে ডিম্বাণু বিক্রি করে ধার শোধ করার ফলও ভয়াবহ হতে পারে। তেমন আশঙ্কার কথা চিকিৎসকরা নাকি জানিয়েছেন এই তরুণীকে। তবুও পিছিয়ে আসতে পারেননি তিনি।

চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন, ডিম্বাণু দেওয়া মোটেই রক্তদানের মতো নয়। এর আগে হাজারো পরীক্ষা  করানো হয়। দেখা হয়, দাতার শরীরে কোনো অসুখ আছে কি না। তার বয়স, নেশার অভ্যাস, স্বাস্থ্য—সব দিক দেখে তবেই ডিম্বাণু নেওয়া হয় তার থেকে।

যিনি দিচ্ছেন, তার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যাও। যেমন কোলন ক্যানসার, ভবিষ্যতে আর মা হতে না পারার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে এর ফলে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। হতে পারে আরও অনেক কিছু। পুরোটা হয়তো চিকিৎসকরাও জানেন না। কারণ এত কম পরিমাণে এই কাজ হয় যে, এ সম্পর্কে চিকিৎসকদেরও ধারণা পরিষ্কার নয়। 

এত কিছু জেনেও পিছিয়ে আসতে পারেননি কাসান্ড্রা। ধার শোধ করার জন্য আপাতত এটাই তার একমাত্র রাস্তা। হয়তো আরও অনেকেরও।


সর্বশেষ সংবাদ