হার্ভার্ডের পাশে বিলাসবহুল যৌনপল্লি, আলোচনার কেন্দ্রে ভারতীয় উদ্যোক্তা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫২ PM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫২ PM

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজ এলাকায় অবৈধভাবে পরিচালিত একটি বিলাসবহুল যৌনপল্লি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই মামলায় উঠে এসেছে হাইপ্রোফাইল বেশ কয়েকজন কর্পোরেট নির্বাহী, সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও আইনজীবীর নাম। এদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও জলশোধন প্রযুক্তি বিষয়ক খ্যাতনামা কোম্পানি ‘গ্র্যাডিয়েন্ট’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অনুরাগ বাজপেয়ী।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই অবস্থিত একটি অভিজাত আবাসিক ভবনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই যৌনপল্লি। ‘দ্য কেমব্রিজ ব্রথেল হিয়ারিংস’ নামে পরিচিত এই মামলার তদন্তে জানা গেছে, বেশ কিছু মহিলা, যাঁদের অনেকেই এশিয়া থেকে পাচার হয়ে এসেছেন, তাঁদের দিয়ে গোপনে যৌন পরিষেবা চালানো হতো। গ্রাহকদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র, অফিস ব্যাজ এবং এমনকি ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রেখে পরিষেবা প্রদান করা হতো, যার মূল্য ঘণ্টাপ্রতি ৬০০ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল।
২০২৫ সালের শুরুতে গোপন একটি স্টিং অপারেশনের সময় অনুরাগ বাজপেয়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও সেই সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু সম্প্রতি আদালতের প্রকাশিত এক নথিতে অনুরাগের নাম উঠে আসে, সঙ্গে আরও কিছু কর্পোরেট ব্যক্তিত্বেরও। তবে অনুরাগের মতো প্রভাবশালী এক উদ্যোক্তার নাম জড়ানোয় বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এমআইটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা অনুরাগ, ২০১৩ সালে ‘গ্র্যাডিয়েন্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। জলশোধনের বিশেষ প্রযুক্তির জন্য তাঁর নাম উঠে এসেছিল ‘বিশ্বের শীর্ষ ১০ উদ্ভাবনী ভাবনার’ তালিকায়। তাঁর নেতৃত্বে গ্র্যাডিয়েন্ট আজ একটি বহুজাতিক কোম্পানি, যার কার্যক্রম ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে।
অনুরাগের জন্ম ভারতে। স্কুল জীবন শেষ করেন লখনউয়ের লা মার্টিনিয়ার স্কুল থেকে। এরপর মিসৌরি-কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়ে এমআইটিতে যোগ দেন। পেশাগত জীবনে তাঁর অবদান জল পরিশোধন প্রযুক্তিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
এদিকে মামলার সূত্রে অনুরাগ বাজপেয়ীর পদত্যাগের দাবি উঠলেও, এখন পর্যন্ত তাঁর কোম্পানি ‘গ্র্যাডিয়েন্ট’ প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, “আমরা বিচার ব্যবস্থায় আস্থা রাখি এবং আশাবাদী যে, বিষয়টির একটি সুবিচারমূলক নিষ্পত্তি হবে। গ্র্যাডিয়েন্ট সমাজের জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে।”
তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, তাঁরা গ্রাহকদের তালিকা ও যোগাযোগের পদ্ধতি নিয়েও গভীর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন নজর রয়েছে মামলার ভবিষ্যৎ গতি ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য আইনি পদক্ষেপের দিকেও।