ফরমালিন তাড়াতে পানিতে কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে ফলমূল-সবজি?

  © সংগৃহীত

জীবননাশী বিষ ফরমালিন ছাড়া ফল, সবজি, মাছ, মাংস পাওয়া প্রায় অসম্ভব। যা আমরা খেয়ে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। জীবন চলে যাচ্ছে হুমকির মুখে। জেনে না জেনে আমরা প্রতিদিন এই বিষ খেয়ে চলেছি। তবে একটু সচেতন হলে খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফরমালিন দূর করা যেতে পারে। জেনে নেওয়া যাক কীভাবে ফরমালিন মুক্ত করা যায়।

মাছ-মাংসের ক্ষেত্রে করণীয়

১ ঘণ্টা মাছ-মাংস পানিতে ডুবিয়ে রাখলে শতকরা ৬০ ভাগ ফরমালিন নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো হয় ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ১৫ মিনিট মাছ ডুবিয়ে রাখলে শতকরা প্রায় ১০০ ফরমালিন নষ্ট হয়ে যায়। একটি কার্যকর উপায় হলো, মাছটি রান্না করার আগে কমপক্ষে এক ঘণ্টা লবণ পানিতে ডুবিয়ে রাখা। এতে করে মাছের ফরমালিনের পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ কমে যাবে।

আপনি যখন চাল ধোবেন এবং প্রথমবার চাল ধোয়ার সময় যে পানি বের হবে সেটি দিয়ে প্রথমে মাছটি ধুয়ে নিন। এরপর আবার সাধারণ পানি দিয়ে ধোবেন। দেখবেন এতে করে প্রায় ৭০ শতাংশ ফরমালিন দূর হয়ে যাবে।

আমাদের দেশে এখন শুঁটকি মাছেও প্রচুর পরিমাণে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। শুঁটকি মাছ থেকে ফরমালিন দূর করতে ঠিক একই রকম পন্থা অবলম্বন করবেন। প্রথমে ১ ঘণ্টা লবণ মিশ্রিত হালকা গরম পানিতে পরে ১০ মিনিট ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে ফরমালিন তো দূর হবেই পাশাপাশি মাছের স্বাদও বাড়বে।

শাক-সবজির ক্ষেত্রে করণীয়

সবজি রান্না করার আগে ১০ মিনিট লবণ গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। সবজিকে ফরমালিনমুক্ত করার সব চাইতে ভালো পদ্ধতি হলো- ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে (পানিতে ১০% আয়তন অনুযায়ী) ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখা। এতে প্রায় ১০০ ভাগ ফরমালিন দূর হয়। কোনো ফলমূল খাবার আগে সেটি হালকা গরম এবং লবণ মিশ্রিত পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে করে ফরমালিনের পরিমাণ প্রায় ৯৮ শতাংশ দূর হবে। অনেক সময় ফলমূলে বিশেষ করে আম, লিচুতে স্প্রে করার মাধ্যমে ফরমালিন দেয়া হয়। সেজন্য গাঢ় বা উজ্জ্বল রঙের ফল কেনা থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া কিছু কিছু কাজ করে নিতে পারেন খাবারের ফরমালিন দূর করার জন্য।

ফলমূলের ক্ষেত্রে করণীয়

গরম পানি দিয়ে ধুয়ে

বাজার থেকে যেকোনো ধরনের ফল ও সবজি কেনার পর তা খাওয়ার আগে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। বেশি গরম বা ঠান্ডা পানি সম্পূর্ণভাবে রাসায়নিক দূর করে না। তাই হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। ফল ও সবজির ওপরে থাকা মোম, আঠা ও অন্যান্য রাসায়নিক ধুয়ে দূর করে দিতে পারে উষ্ণ গরম পানি।

লবণ পানি দিয়ে ধুয়ে

একটি বড় পাত্রের মধ্যে পানি নিয়ে তাতে আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে ফল ও সবজি ধুয়ে নিন। লবণ-পানি দিয়ে ধোয়ার পর আবার পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে

রাসায়নিক দূর করার সেরা সমাধান হচ্ছে- ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ফল ও সবজি ডুবিয়ে রাখা। বড় একটি পাত্রে পানি নিয়ে ১ চা-চামচ ভিনেগার মিশিয়ে সেই পানিতে ফল ও সবজি ভিজিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর কলের পানি দিয়ে আবার ধুয়ে নিন।

খোসা ফেলে দিয়ে

যেসব ফল ও সবজির খোসা ফেলে দেওয়া যায়, সেগুলোর খোসা ফেলে দিন। যেমন: পেঁয়াজ, আলু, অ্যাভাকাডো, আপেল, আদা, আম, গাজর, মূলা ইত্যাদি। প্রথমত এসব ফল ও সবজি ধুয়ে নিন, তারপর খোসা ফেলে দিন। খোসা ছাড়ানোর পর আবারো ধুয়ে নিন।

কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো ফল চেনার উপায়

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আম কাটার পর চামড়ার ঠিক নিচে ফলের অংশ কাঁচা পাওয়া যাবে। যদিও চামড়াটি পাকা রঙের বর্ণ ধারণ করেছিল। যদি ঝুড়িতে বা দোকানে সব ফল একই সময়ে একই রকম পাকা দেখা যায় এবং দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ফলের চামড়ায় আঁচিল বা তিলের মতো রং দেখা যায়। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় যে ফল পাকে তাতে মাছি বসবে কিন্তু কেমিক্যাল দ্বারা পাকানো হলে সে ফলে মাছি বসবে না। প্রাকৃতিকভাবে পাকা ফলের চামড়া উঠানোর পর এক ফোঁটা আয়োডিন দিলে তা গাঢ় নীল অথবা কালো বর্ণ ধারণ করে। কিন্তু কেমিক্যাল দ্বারা পাকানো ফলে এই আয়োডিনের রং অপরিবর্তিত থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence