যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
হোস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যু, র্যাগিংয়ের অভিযোগ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩২ AM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩২ AM
ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হোস্টেলের ‘এ’ ব্লকের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে ‘কোনোভাবে’ পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ছাত্রের নাম স্বপ্নদীপ কুন্ডু (১৮)। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।
নদিয়ার হাঁসখালির বগুলা এলাকার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। হোস্টেলের অন্য ছাত্রদের দাবি, বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে তারা ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান। গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বপ্নদীপ। উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গত বুধবার থেকে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়। স্বপ্নদীপ ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিভাগে ক্লাস করে যে তাঁর খুব ভাল লেগেছে, তা বাবা এবং মামাকে জানিয়েছিলেন। এরপর বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটায় তাঁর মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনিয়ে উঠেছে। তিনি হোস্টেলের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে, তা তদন্তে নেমে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বাংলা বিভাগের শিক্ষক রাজ্যেশ্বর সিন্হার বক্তব্য, এই মৃত্যু মর্মান্তিক। র্যাগিং হিসাবে বিষয়টিকে ধরে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এফআইআর করা উচিত। স্বপ্নদীপ নিজে ভালবেসে বাংলা পড়তে এসেছিল। ওর পড়তে ভাল লাগছিল। সে কথা ওর বাবাকে নিজেই জানিয়েছে। তার পর এই ঘটনা ঘটল কী করে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুণাল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যও বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। তাঁর দাবি, র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে স্বপ্নদীপ মারা গিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, একটি প্রথম বর্ষের ছাত্র র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে একটু আগে মারা গেছে। আমার মনে পড়ে, র্যাগিং সত্যিই ‘র্যাগিং’ কি না, সেটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দিয়ে ঠিক করতে হবে, এই কথা বলে প্যামফ্লেট প্রকাশ করে সব কাজের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে চাওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর পর নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা অনেকেই করবে।
সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ভাল লাগলেও হস্টেলে স্বপ্নদীপের কোনও সমস্যা হচ্ছিল। রাত ১০টা নাগাদ বাবাকে ফোন করে তিনি বলেছিলেন, তাঁকে নিয়ে যেতে। কুণাল চট্টোপাধ্যায়ের পোস্ট এবং রাজ্যেশ্বর সিন্হার বক্তব্যে স্বপ্নদীপের মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।