নির্মলেন্দু গুণের প্রতিষ্ঠানকে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যলয়ের অধিভুক্ত করার দাবি

  © সংগৃহীত

বাংলা ভাষার অন্যতম কবি নির্মলেন্দু গুণ। কবিতাই তার ঘর-সংসার। দেশ-বিদেশে তার খ্যাতি অনেক। কবি তার নিজের জন্মভূমি নেত্রকোণায় গড়ে তুলেছেন ‘কবিতাকুঞ্জ’ নামে কাব্য–গবেষণার একটি প্রতিষ্ঠান।

‘বিশ্ব কবিতার বাসগৃহ’ স্লোগানে প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। কবিতাকুঞ্জের মূল উদ্দেশ্য - বিশ্বের সব ভাষার কবিদের কাব্যগ্রন্থ সংগ্রহ করা, গবেষণা করা এবং সব ভাষার কবিদের কবিতাকে একত্র করে তা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে কবি নির্মলেন্দু গুণ স্বাধীনতা পুরস্কারের সম্মনী দিয়ে নেত্রকোনা জেলা শহরের মালনী এলাকায় মগড়া নদীর তীরে আট শতাংশ জমির ওপর কবিতাকুঞ্জ গড়ে তোলেন। প্রথমে কবি নিজের অর্থ ব্যয় করে প্রতিষ্ঠানটির কাজ শুরু করলেও পরে অর্থ সহায়তা করেছেন অনেকেই। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পরিচিতি পেতে শুরু করেছে।

এই প্রতিষ্ঠানকে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যলয়ের অধিভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন কবি নিজেই। ফেসবুকে এক খোলা চিঠিতে এ দাবিব জানান তিনি। নিচে সেই খোলা চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

মাননীয় উপাচার্য 
শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়
নেত্রকোণা,
সমীপেষু

বিষয়: আমার প্রতিষ্ঠিত কবিতাকুঞ্জকে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যলয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসাবে আত্মীকরণ করার জন্য আমার প্রস্তাব

মহোদয়,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি লীজ নিয়ে ২০১৬ সালে আমি নেত্রকোণা শহরের মালনীতে, মগরা নদীর তীরে  বিশ্বকবিতার বাসগৃহ হিসাবে কবিতাকুঞ্জ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলি। ঐ বছরে পাওয়া আমার স্বাধীনতা পুরস্কারের  অর্থ দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজ শুরু হলেও-- প্রয়োজনের তুলনায় সেই অর্থ ছিলো খুবই কম। তখন আমার পরিকল্পনার কথা জেনে, আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমার বহু অনুরাগী-সুহৃদ এই প্রতিষ্ঠানে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। 
তাঁদের সাহায্য ও সহযোগিতা না পেলে আমার পক্ষে কবিতাকুঞ্জ গড়ে তোলা কখনও সম্ভব হতো না। কবিতাকুঞ্জের দেয়ালে অর্থ সহায়তা প্রদানকারীদের নাম ও তাঁদের প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ তিনটি ডোনার বোর্ডে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। চতুর্থ ডোনার বোর্ডটি এখন প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। তাঁরা সবাই কবিতাকুঞ্জের সম্মানিত সদস্য হিসাবে গণ্য হন এবং ভবিষ্যতেও হবেন। অর্থ সহায়তা ছাড়াও, যারা কবিতাকুঞ্জকে বিভিন্ন দেশের কাব্যগ্রন্থ  এবং কাব্যবিষয়ক আলোচনা গ্রন্থ দান করে কবিতাকুঞ্জের সংগ্রকে সমৃদ্ধ করেছেন-- তাঁরাও কবিতাকুঞ্জের সম্মানিত সদস্য আছেন এবং থাকবেন। 

বাংলাভাষার সকল গুরুত্বপূর্ণ কাব্যসমূহসহ ইতিমধ্যে প্রায় ৮০-৯০টি দেশের কালজয়ী কবিদের রচনা আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি-
কবিতাকুঞ্জের গ্রন্থতালিকাটি এখানে সংযুক্ত করা হলো। 

মূল-ভাষায় রচিত কাব্যের পাশাপাশি ইংরেজী ও বাংলায় অনুবাদিত রচনা এবং বিভিম্ন ভাষার অভিধান ও ব্যাকরণ গ্রন্থও আমরা সংগ্রহ করেছি। কবিতাকুঞ্জের গ্রন্থসংখ্যা প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি। 
দার্শনিক প্লেটোর মতো আমরা বিশ্বাস করি - "Poetry is nearer to vital truth than history."

আমরা বিশ্বাস করি এই প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায়, বিভিন্ন সময়ে রচিত কাব্যসম্পদ নিয়ে তুলনামূলক গবেষণার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। 

নেত্রকোণায় প্রতিষ্ঠিত শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গ্রহণ করলে-- কবিতাকুঞ্জ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব ও সহজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। 

বাংলা সাহিত্য ও ইংরেজী সাহিত্যের পাশাপাশি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য ও বিশ্বকাব্যকে একটি অন্যতম বিষয় হিসাবে চালু করা যেতে পারে। 

আমার এই প্রতিষ্ঠানটি যাতে আমার অবর্তমানে একটি অভিভাবকহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয়- সেই লক্ষ্যেই আমি শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কবিতাকুঞ্জের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি। 

আমি বিশ্বাস করি, আমার এই প্রস্তাবের প্রতি কবিতাকুঞ্জের সম্মানিত সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের সমর্থন থাকবে।
কবিতাকুঞ্জের সামান্যকিছু দায় রয়েছে-- দ্বিপক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা সেগুলো মিটিয়ে নিব।

সবিনয় ইতি
নির্মলেন্দু গুণ
২০ জুলাই ২০২২


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence