মানিকগঞ্জের করোনা টিকা নেওয়া ১১২ স্কুলশিক্ষার্থী সুস্থ আছে

করোনা টিকা নেয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ
করোনা টিকা নেয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ  © ফাইল ছবি

পরীক্ষামূলক করোনার টিকা নেওয়ার পর মানিকগঞ্জের ১১২ স্কুলশিক্ষার্থীর শরীরে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়নি। তারা সবাই সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

দেশে প্রথমবারের মতো ১২-১৭ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর বাড়তি সর্তকতাও গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। টিকা গ্রহণকারীদের আগামী ১৪ দিন পযর্বেক্ষণে রাখার জন্য গঠন করা হয়েছে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম। শনিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিতি থেকে ১২-১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে করোনা টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ দিন ১২০ জন স্কুলশিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগ করার কথা থাকলেও বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১১২ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়। আটজন শিক্ষার্থী টিকা নিতে কেন্দ্রে আসেনি।

মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মশিউর রহমানের সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, টিকা নেওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকার পর বাসায় চলে আসে। বাসায় তার বাবা-মাও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখছে। তবে টিকা নেওয়ার পর তার শরীরে কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি।

একই দিন করোনার টিকা নিয়েছে মানিকগঞ্জ এসকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা খান। আলাপকালে আয়েশা বলে, স্কুল বন্ধের সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের টিকা নেওয়ার খবর টেলিভিশনে দেখেছি। স্কুল খোলার পর স্যার-ম্যাডামরাও বলতেন, তোমাদেরও টিকা দেবে সরকার। টিকা নেওয়ার পর আল্লাহর রহমতে এখনও সুস্থ আছি। 

আরেক স্কুলশিক্ষার্থীর বাবা বলেন, স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ স্কুল খোলার পরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি জেনেও মেয়েকে স্কুলে পাঠাতাম। সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতাম। মেয়েকে টিকা দেওয়াতে এখন অনেকটাই চিন্তামুক্ত হলাম।

মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজে উপস্থিত থেকে স্কুলশিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলকভাবে ফাইজারের টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। বৃহস্পতিবার জেলার চারটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২-১৭ বয়সী ১২০ স্কুলশিক্ষার্থীর মধ্যে ১১২ জনকে প্রথমবারের মতো টিকা দেওয়া হয়। টিকা নেওয়া এসব শিক্ষার্থীদের আগামী ১৪ দিন সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এ জন্য চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জের ১১২ জন স্কুলশিক্ষার্থীকে ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩০ লাখ শিশুশিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে দেশের এক কোটি শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।


সর্বশেষ সংবাদ